Bangla Premer Golpo স্ট্রবেরি
Bangla Premer Golpo স্ট্রবেরি । বাংলা প্রেমের গল্পে একটি গল্প স্ট্রবেরি দুষ্টু-মিস্টি প্রেমের গল্প ।
Bangla Premer Golpo স্ট্রবেরি
কয়দিন ধরেই লক্ষ্য করছে সুনিতা ।ঠিক বিকেলে প্রায় প্রতিদিনই রজত বাগানের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে।ঘরের পাশেই বেশ কিছুটা জমি জুড়ে বাগান । বিভিন্ন রকমের ফল এবং ফুলের গাছ আছে । কিছু স্ট্রবেরীও লাগানো আছে । যদিও স্ট্রবেরী হয়না এই এলাকায় বিশেষ। তবে সখে অনেকেই চাষ করে থাকে ।
সুনিতার বিশেষ পছন্দের ।তাছাড়াও বাগানে বিভিন্ন ফল এবং ফুলে ভরে আছে।বাগানটি বেশ শক্ত-পোক্ত বেড়া দিয়ে ঘেরা। কারন পাড়ায় কোত্থেকে একটা বেওয়ারিশ ষাঁড় এসে জুটেছে সবাই তাঁর নাম দিয়েছে ভোলা।ভোলানাথ শিবের বাহন তাই। বেশ কিছু মানুষকে আহতও করেছে।কিশোর মণ্ডলকেতো মেরেই ফেলেছিল প্রায়। পাড়ার লোকেরা রে রে করে ছুটে এসে গায়ে জল ছিটিয়ে এবং আগুন জ্বেলে ভয় দেখাতে সে যাত্রা প্রানে রক্ষে পায়।সেই থেকে সবাই তাকে সামলে চলে।কারও বাগান বা শাক-সব্জি মুখের সামনে যা পায় খেয়ে নেয়।
বাগানের সামনে রজত এসে দাঁড়িয়েছে।তারা সমবয়স্ক একসাথেই পড়াশুনা করলেও দুজনের মধ্যে খুব একটা বন্ধুত্ব নেই।একটু আধটুই কথা হয়। আবারও সুনিতার চোখ গেল সেদিকে। সুনিতা অবাক হয়ে ভাবতে থাকে কেন ও দাঁড়িয়ে থাকে ? তবে কি তার জন্যেই।এক ঝলক দেখা পাওয়ার জন্যে।রজত কি তার প্রেমে পড়েছে। না না এটা হতে পারেনা।
ধ্যাত ! কিসব ভাবছে সে।আবার মনে মনে তার অহং বোধ জাগে। হতেই পারে রিতি মতো সুন্দরী সে তাকে অবহেলা করা কার সাধ্যি আছে!
রাস্তা-ঘাটে অনেক ছেলে বুড়োই হাঁ করে তাকিয়ে থাকে অষ্টাদশী সুনিতার দিকে ।আর রজত যদি
তার প্রেমে পড়ে সেটা এমন কি অস্বাভাবিক ! মুচকি হাসে সে। দারুণ এক খুশিতে মন ভরে গেল তার , নায়িকা নায়িকা ভাব জাগছে তার ভিতর । কেমন একটা পুলক জাগে সুনিতার মনে।ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল
রাস্তা-ঘাটে অনেক ছেলে বুড়োই হাঁ করে তাকিয়ে থাকে অষ্টাদশী সুনিতার দিকে ।আর রজত যদি
তার প্রেমে পড়ে সেটা এমন কি অস্বাভাবিক ! মুচকি হাসে সে। দারুণ এক খুশিতে মন ভরে গেল তার , নায়িকা নায়িকা ভাব জাগছে তার ভিতর । কেমন একটা পুলক জাগে সুনিতার মনে।ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল
দুদিকে দুহাত বাড়িয়ে আকাশের দিকে মুখ করে চোখ বন্ধ করে। সুর তুলে গুন গুন করে গান গেয়ে উঠল -সখি
ভালোবাসা কারে কয়……। দখিনা বাতাসে তার উড়না উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মুখের উপর চুল উড়ে এসে পড়ছে।
প্রতিদিনের মত আজও ঠিক বিকেল হতেই বাগানের সামনে এসে দাঁড়াল রজত। সে দেখল সুনিতা তার দিকেই
এগিয়ে আসছে।ওরে বাবা ! বুকের ভিতরটা ঢিপ ঢিপ করছে।কি বলতে না কি বলে ফেলে।সুনিতা-রজত একই
সাথে একই কলেজে পড়ে ।দুজনের মধ্যে কথা বার্তাও স্বাভাবিক হয়। তবে তাদের খুব একটা ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব নেই ।
ভালোবাসা কারে কয়……। দখিনা বাতাসে তার উড়না উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মুখের উপর চুল উড়ে এসে পড়ছে।
প্রতিদিনের মত আজও ঠিক বিকেল হতেই বাগানের সামনে এসে দাঁড়াল রজত। সে দেখল সুনিতা তার দিকেই
এগিয়ে আসছে।ওরে বাবা ! বুকের ভিতরটা ঢিপ ঢিপ করছে।কি বলতে না কি বলে ফেলে।সুনিতা-রজত একই
সাথে একই কলেজে পড়ে ।দুজনের মধ্যে কথা বার্তাও স্বাভাবিক হয়। তবে তাদের খুব একটা ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব নেই ।
তাছাড়া সুনিতা ভীষণ সুন্দরী তার একটু ঘ্যাম আছে বলেই মনে হয় ।সেটাই স্বাভাবিক, কারন সব ছেলেরাই তাকে
রূপকথার পরি ভাবতেই ভালবাসে।তাছাড়া পারিবারিক দিক থেকেও একটা আভিজাত্যের প্রভাব আছে সুনিতাদের।
তার বাপ কাকারাও সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তি। সকলেই সম্মান করে।তাই সুনিতার সাথে বেশি মেলামেশা করা বা
প্রেম করা মানে বুকে অসীম সাহস নিয়ে এগোতে হবে।আর সে সাহস রজতের নেই।কিন্তু সাহস নেই বললেই চলে!
অবাধ্য যৌবন কোন বাধা মানে না যে। মনের মধ্যে হাজার আকুলিবিকুলি চলতে থাকে।অযথা ঝঞ্ঝটে পড়তে চায়না।
এইতো সেদিন পাড়ার সবথেকে ডাকাবুকো ছেলে হিসেবে সবাই যাকে চেনে ভোলা।কলেজ যাওয়ার জন্যে বাসের
অপেক্ষা করছিল। সরাসরি আই লাভ ইউ বলতে গিয়ে কি কেলেঙ্কারিটাই না বাধিয়ে ছিল।সুনিতাও মুখের উপর
কয়েকটা কথা শুনিয়ে দিতেই ব্যাস সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে উত্যক্ত করতে শুরু করে দেয়। সুনিতাও রেগে গিয়ে কষিয়ে
এক থাপ্পড়।বিপদে পড়েগিয়েছিল সুনিতা সেদিন, কারন থাপ্পড় খাওয়ার পর চুপকরে থকবার ছেলে নয় ভোলা।
সেযাত্রা রজতই রক্ষা করেছিল তাকে।ঝগড়া একটু করতে হয়েছিল অবশ্য। তবে ভাগ্য ভালো বাসস্ট্যান্ডের সকলে
রজতের আর সুনিতার সাথ দিয়েছিল। সুনিতার বাবা-কাকা তাকে খুব বাহবা জানিয়ে ছিল।যদিও ভোলা আর
তার মধ্যে একটা পার্থক্য অবশ্য আছে। তবে ভোলার মতো একটা ছেলের গায়ে হাত তুলা খুব সহজ কথা নয়।
পার্টির দাদাদের হাত তার মাথার উপর থাকে।তা সত্ত্বেও সুনিতার বাবা লকআপে পুড়ে দিয়েছিল ক্ষমা চাওয়ার পর
ছাড় পায়।তাই রজত সুনিতার থেকে একটু সামলেই চলে।
কিন্তু সুনিতা রজতকে একটু অন্য চোখে দেখে কারন সেদিন রজত সুনিতার সাথ দিয়েছিল।হয়ত রজত সাথে
থাকায় সুনিতাও সেইজন্যে একটু বেশিই সাহস পেয়ে গিয়েছিল!
অবশ্য রজতেরও পাড়ায় যথেষ্ট সুনাম আছে ।পড়াশুনাতেও ভালো। দেখতেও একদম ঝাক্কাস।দিব্বি হিরো মার্কা চেহারা।
কলেজের অনেক মেয়েই তার প্রেমে পড়তে চায়। কিন্তু রজত সে বিষয়ে একটু উদাসীন।
সুনিতা এগিয়ে এসে বলল, "কি ব্যাপার রে তোর?রোজ রোজ এখানে এসে দাঁড়িয়ে থাকিস, মতলবটা কি অ্যাঁ?কিছু
খারাপ ধান্দা আছে বুঝি? চুরি টুরি করার মতলব নেইতো?" হাসতে হাসতে এক নিশ্বাসে একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল রজতের দিকে ।
রজত একটু নাটকীয় ভঙ্গিমায় অবাক হয়ে বলল, "যাঃ বাব্বাঃ একেবারে চোর ?"
এবার কিছুটা কমেডিয়ান সুরে হাত পা নেড়ে বলল, "আরে আমি বিকেলে একটু হাওয়া খেতে আসি ।আর রাস্তা দিয়ে
যাওয়ার সময় এই স্ট্রবেরী গুলো দেখতেই দাঁড়িয়ে তোর বাগানে উঁকি মারি। বিশ্বাস কর কি মিষ্টি দেখতে এই ফল গুলো।"
মুখে একটা দুষ্টু হাসি খেলে গেল রজতের।
“তোর বাগানে” কথাটা শুনে সুনিতা লজ্জ্বায় লাল হয়ে গেল ।নিচের দিকে মুখ করে কানের উপর ঝুলে পরা চুল গুলো
হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়ে এবার লাজুক মুখে ভ্রু নাচিয়ে বলল, "শুধু স্ট্রবেরী নাকি অন্য কিছু?"
রজত ভাবছে সেতো বিনা কারণেই টাইম পাশ করতে আসে। হাঁটতে হাঁটতে চলে আসে এখানে।কে জানে
সুনিতা কি ভাবছে!বলল, "অন্য আবার কি দেখার আছে?"
সুনিতার মনটা কেমন করে উঠল শুধু ক্ষণিকের জন্যে স্ট্রবেরী দেখতে আসে, তাকে নয় !
অন্যকিছু উত্তর আশা করেছিল সুনিতা। হয়তো রজত বলবে তোর জন্যে ,তোকে ভালো লাগে তাই জানালায় তোকে
দেখি কিংবা সেই চরম বানী যেটা শুনবার প্রত্যাশায় প্রতিটি মানুষ অধীর হয়ে থাকে ।সেই অদ্ভুত শব্দ ভালোবাসি।
এমন কিছুই রজতের মুখে না শুনে কিছুটা রাগ আর অভিমানে লজ্জ্বায় কি বলবে ভেবে না পেয়ে নিচু স্বরে বলল,
"তুই কিছু চুরি করে নিয়ে যাবিনা তার কি মানে আছে?" নিরাশ সুনিতা যেন হেরে গিয়ে অভিমানে গাল ফুলিয়ে রেখেছে।
"বারে ,এই যে ভোলা নামের ষাঁড়টি ,পাড়ায় ঘুরে বেড়ায় ওটাতো ছাড়াই থাকে ।কার
বাগানে কখন হামলে পড়বে কে বলতে পারে ?"
রজত মুচকি হাসি আর চোখের ইশারা করে আরও বলল,"এক কাজে দু-কাজ হল, হাওয়া খাওয়াও হল আর
এই স্ট্রবেরী আগলে রাখাও হল আর …"
আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল রজত ততক্ষণে সুনিতা রজতের সব কথায় বুঝতে পেরে সহাস্যে বলল,
"রক্ষকই আবার ভক্ষক হয়ে যাবেনাতো।" রজত দেখছিল সুনিতার চোখগুলো অসম্ভব উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে,ঠোঁট দুটি ঈষৎ কম্পমান।
সুনিতা আরও কাছে এগিয়ে আসছে যেন নিজেকে সমর্পিত করে দিতে চাইছে। রজতও আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না।
ভীষণ আবেগে সুনিতাকে কাছে টেনে নিয়ে বলল,"কেউ যদি নিজেকে উজার করে দিতে চায় তাহলে রক্ষকের ভক্ষক হতে দোষ কি !"
রজত দেখছিল সুনিতার মুখ অস্তগামী সূর্যের মত লাল হয়ে উঠেছে।
[সমাপ্ত ]
******************************
সন্দেহ / অনুভুতির আবেগে / অন্তহীন /
