সন্দেহ
অনেক স্বামী-স্ত্রীই আছে যারা একে অপরকে সন্দেহ করে থাকে। তেমনই এক সন্দেহ প্রবন দম্পত্তির মিস্টি মধুর প্রেমের গল্প "সন্দেহ''।
"সব সম্পর্কই টিকে থাকে বিশ্বাসের উপর।একবার বিশ্বাস হারালে সব
কিছুই তছনছ হয়ে যায়। প্রতি মুহুর্ত্বে একে অপরের উপর কেবল
সন্দেহ নিয়ে বেঁচে থাকা ঠিক নয়।আবার অনেক সময় বিশ্বাস করার
অভিনয় করে থাকতে হয়। bangla choto golpo sandeh
তখন মানুষের জীবন কেবল বোঝা হয়েই উঠে না ,যন্ত্রণা দায়ক হয়ে পড়ে।"
কথা গুলো এক নিশ্বাসে বলতে বলতে চায়ের কাপে চুমুক দেয় সমর।আঁচলে
হাত মুছতে মুছতে শ্রীতমা যেন সব বুঝে গেছে এমন ভাব করে রান্না ঘরের
দিকে চলে গেল। এই এক হয়েছে জ্বালা ।
কিছু একটা বললেই একেবারে রামায়ণ মহাভারত না বুঝিয়ে ছাড়বে না
সমর।মাথার যন্ত্রণা করে ছাড়ে।"ফেসবুকে কি করছে?"শুধু এটুকুই তো
জিজ্ঞাসা করেছে শ্রীতমা। কি এমন অন্যায় করে ফেলেছে? স্বামীর প্রতি
এটুকু অধিকার কি থাকতে নেই? মনে মনে বলতে থাকে শ্রীতমা।
bangla choto golpo sandeh
আসলে হয়েছেটা কি! বেশ কিছুদিন শ্রীতমা যেন সন্দেহের চোখে দেখছে
সমর কে।তার আপত্তিজনক বিষয়গুলো সমরের কাছে বড্ড বেশি বিরক্তিকর
লাগে ।দেরি করে বাড়ি ফিরা, তার সাথে কোন বিষয়ে কথা হচ্ছে,এমন
সময় কোন বন্ধুর ফোন রিসিভ করা।
অযথা তাকে পাত্তা না দিয়ে,সোশ্যাল
নেটওয়ার্কে বীজি থাকা।রাস্তায় একসাথে বেরলেই সুন্দরী কোন অল্প পরিচিত
মহিলার সাথে কথা বলতে দেখলে এবং আরও অনেক কিছু ব্যাপারেই।
শ্রীতমার সন্দেহ হয় আজকাল। এমন হলে সন্দেহ হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু সমরের
কাছে বেশ বিরক্তিকর মনে হয়।
এই,একটু আগে ফেসবুক করছিল সমর।এমন সময় মোবাইলের স্ক্রিনে এক
রমণীর ছবি প্রস্ফুটিত হয়ে উঠলে শ্রীতমারও চোখ এড়াল না।চা নিয়ে
এসেছিল সমরের জন্যে।দেখেই অস্থির,ভিতরে ভিতরে রেগে আগুন।কিন্তু
মুখে তেমন কিছু বলতেও পারছে না।দাঁড়িয়ে আছে।তারপর চোখ বড়
বড় করে বলেই ফেললো একটু শাষনের ভঙ্গিতেই, "তাহলে এইসব হয় ফেসবুকে?"
বিস্ময়ে চোখ তুলে সমর বলে উঠে,"কি সব?"
"কার সাথে চ্যাট হচ্ছে?"
"চ্যাট? ওহ গড! শ্রী, সন্দেহেরও একটা লিমিট থাকে।তুমিতো দেখছি......।"
bangla choto golpo sandeh
"শোন শ্রী,"
আর তখনই শ্রীতমা সেখান থেকে চলে গেল।
বিকেলে হাঁটতে বেরিয়ে হঠাৎ শ্রীতমার এক স্কুল বেলার
বান্ধবী'র সাথে দেখা।
"আরে সৌমি? তুই এখানে কি ব্যাপার? কতদিন পর……।"
"আরে শ্রীতমা?………।"
তারপর কত কথা দুজনের যেন হরিহর আত্মা।কথা থামছিলই না। বিরক্ত
হয়ে সমর মাঝে থামিয়ে দিয়ে বলল,
"আরে শ্রী একদিন না হয় বাড়িতেই ডেকে নাও।আড্ডা হবে জমিয়ে ।"
"হ্যাঁ একদিন বাড়িতে আয় না।"
"হ্যাঁ সে না হয় ঠিক আছে। কিন্তু,আমি তোর বাড়ির ঠিকানা জানিনাতো।"
"আরে এইতো কয়েকটা ঘর ছেড়েই ।আমার বরের নাম বলবি। যে কেউ
দেখিয়ে দেবে।আজ সন্ধ্যেয় আয়না।"
"আচ্ছা ঠিক আছে চেষ্টা করবো।"
bangla choto golpo sandeh
পাশ কাটিয়ে চলে যেতেই শ্রীতমার মুখটা কেমন যেন ভারী হয়ে গেল।সমর ওই
ভাবে তাকাচ্ছিল কেন সৌমিকে।সৌমিটাও একদম হেসে যেন ঢলে
পড়বে গায়ে। সেই কলেজের দিনগুলোর মতোই রয়ে গেছে। খুব মনে
পড়ে শ্রীতমার সেদিনও এমন বসন্ত কাল ।
রমেন স্যার কে
কিভাবে ফাঁসিয়ে ছিল সৌমি। সে তার প্রিয় বান্ধবী হলেও তাকে ঠিক
এই সব ব্যাপারে বিশ্বাস করা যায় না ।
কনুইএর গুঁতো দিয়ে সমরকে বলল,"সৌমি আমার থেকেও সুন্দরি তাইনা?"
উভয়সঙ্কটে পড়ল সমর ।কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না কারন সৌমি কে
কোন ভাবেই সুন্দরি বলা যাবে না । তাহলে তার ফল তাকে ভুগতে হবে ।
"হ্যাঁ সুন্দরীইইই , তবে তোমার মতো নয়।"
"তাহলে ওই ভাবে দেখছিলে কেন? আবার বাড়িতে নেমতন্ন করার এতো আগ্রহ কেন শুনি?"
"যাহ বাব্বা! কিভাবে দেখছিলাম?" একটু যেন থতমত খেয়ে গেল সমর।
"ঠিক আছে চলো চলো।"
স্মার্টলি জবাব দিলেও সমর কিন্তু বুঝতেই পারল সে ফেঁসে যাচ্ছিল এক্ষুনি।
bangla choto golpo sandeh
বাড়ীতে আসার কথা না বললেই পারত। যাইহোক বাঁচা গেল।
সারা দিন ডিউটির পর ভীড় বাসে এই গরমে ঘামের গন্ধে তিতিবিরক্ত হয়ে
বাড়ি ফিরছে সমর ।ভাবছে বাড়িতে গিয়েও কি আর শান্তি আছে !তার
উপর আবার সন্দেহের রোগ ধরেছে শ্রী'কে।
এইসব ভাবতে ভাবতেই বাড়ি ফিরে
ওয়াশ রুম থেকে বেড়িয়ে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে শ্রীতমা কে চা করতে
বলেই । ফেসবুকে মুখ গুঁজে দিল।চায়ের প্লেট হাতে নিয়ে এসে শুনো ?
"হুঁম ।"
"তোমার শুধু ফেসবুক আমার কথাতো কানেই তোল না।"
"বলবে তো।"
শ্রীতমা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে।
"জানো?"
"না জানালে জানবো কি করে?"
এবারও একটু রেগেই গেল শ্রীতমা।মুখ ভার করে নিচু স্বরে বলল
"সৌমি এসেছিল।"
"ওহ, সেতো ভালো কথা।"
"বলছি যে ও কিছু দিন আমাদের বাড়িতে থাকবে।"
সমর একটু অবাক হয়েই মোবাইল থেকে মুখ সরিয়ে বলল,
"কেন?"
"সৌমির হাসব্যাণ্ড ব্যাবসার কাজে কয়েক দিনের জন্যে ইউনাইটেড স্টেটে গিয়েছে ।
ওর তেমন কোন আত্মীয় পরিজনও নেই এখানে।ওর বাবা মা উত্তর বঙ্গে
থাকেন আর শ্বশুর বাড়ির সকলে বেঙ্গালুরুতে……।"
একটু থেমে আবার বলল ,
"তার ওপর " কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেল।
"ঠিক আছে তোমার বান্ধবী থাকবে তোমার ব্যাপার আমার কোন আপত্তি নেই।"
তবে দেখো।" বলেই থেমে গেল সমর ।সমর হয়তো বলতে চেয়ে ছিল সৌমিকে নিয়ে
আবার সন্দেহ করবে নাতো। কিন্তু সাহস করে বলে উঠতে পারলনা ।
bangla choto golpo sandeh
কিন্তু সমরের সিক্স সেন্স বলছে কোথাও একটা সমস্যার বীজ বুনা হল।
এই কটা দিন খুব সাবধানে থাকতে হবে সমরকে ।একটু হিত কে বিপরীত হলেই
আর রক্ষে নেই ।তাই সৌমির থেকে একটু এড়িয়েই থাকে সমর।একবারেই অশান্তি
পছন্দ নয় তার। সৌমির যেকোন কথার জবাবে হ্যাঁ কিংবা না তেই জবাব দেয় সমর।
যথারীতি পরদিন, অফিস যাওয়ার উদ্দ্যেশে বেড়িয়ে তাড়াহুড়ো করতে করতে হাতের ব্যাগটা
পড়ে যায়। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা সৌমি ঝুঁকে পড়ে ব্যাগটা তুলে সমরের হাতে ধরিয়ে
দেয় ।মুচকি হেসে "থ্যাংকইউ" বলে সমর।শ্রীতমাকে আসছি বলেই বেড়িয়ে যায় । এরপর
দুজনে হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠল।এমন সময় হঠাৎ শ্রীতমার মায়ের ফোন এল।
বাবার খুব শরীর খারাপ এখনি হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। শ্রীতমা কি করবে
ভেবে পাচ্ছে না । একবার ভাবল সমর কে ফোন করবে । কিন্তু তাড়াহুড়ো
করতে করতে ভুলেই গেল এবং সটান বেড়িয়ে পড়ল ।
সৌমি বলল ,"সাবধানে যাস ……।"
হাসপাতালের গেটে এসে মাকে দেখতে পেয়েই জিজ্ঞাসা করল, "কেমন আছে বাবা?"
চোখ ছল ছল করছিল শ্রীতমার মায়ের বলল,
"ডাক্তার দেখছে।"
"কি হয়ে ছিল ?সুস্থই তো ছিল?" বলেই কেঁদে ফেলল শ্রীতমা।
"হ্যাঁরে সকাল থেকে ভালোই ছিল।হঠাৎ বলে কিনা বুকে ব্যাথা করছে তারপর মাথা ঘুরে…।"
এমন সময় ডাক্তার এসে বলল,
"সব ঠিক আছে তেমন কিছু নয় । গ্যাসের প্রবলেম, কয়েকটা টেস্ট করিয়ে নেবেন।
আর হ্যাঁ একটু রেস্টে থাকতে হবে। বয়স হয়েছেতো।"
শ্রীতমা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। তারপর বাবার সাথে কথা বলল।এবার ফিরতে
হবে শ্রীতমা কে।
বাবা আর মাকে পৌঁছে দিয়েই তবে সে বাড়ি ফিরবে। গাড়িতে গিয়ে বসল সবাই ।
আরে ভুলেই গিয়েছিল সমর কে কিছু বলাই হয়নি। এখনি একবার ফোন করতে হবে।
এদিকে সৌমিও বাড়িতে একা আছে । ভেবেই মনটা কেমন করে উঠল।
সমর আজকাল কেমন যেন পালটে গেছে । স্বভাব টা ঠিক নেই বলেই মনে হয় তার ।
তাকে সময় দেয় না মোটেই সারাদিন অফিসের কাজ আর বাড়ি ফিরলেই সোশ্যাল মিডিয়াই মুখ গুঁজে দেয়।
সমরের কাছে যেন তার কোন সময় নেই। অথচ বিয়ের প্রথম প্রথম কত ভাব কত ভালবাসা।
তাকে ছাড়া থাকতেই পারত না ।আর এখন? যেন সমরের কাছে তার কোন গুরুত্বই নেই।
পাঁচ বছর হয়ে গেল এখনও সে নিঃসন্তান রয়ে গেল ।এই জন্যেই কি? না এ বিষয়ে সমরের
কোন দিনের কোন অভিযোগ নেই। ডাক্তারতো বলেইছে সম্ভাবনা রয়েছে হান্ড্রেড পারসেন্ট।খালি
বাচ্চা আসছে না কোন এক অদৃশ্য কারণে ।
এ বিষয়ে সমর বেশ আশাবাদী। তাহলে তার উপর থেকে মন উবে যাওয়ার কারণ কি? যথেষ্ট
সুন্দরী সে একটু না হয় মুটিয়ে গেছে। আজকাল আয়নার সামনে গেলেই পেটে হাত বুলিয়ে
বুলিয়ে দেখে, তল পেটে বেশ ভালোই মেদ জমেছে।
এই মোটা হয়ে যাওয়াই কি সমরের অপছন্দের কারণ? এমন হাজার প্রশ্নের ঢেউ উঠে শ্রীতমার
মনে। হলেও হতে পারে। তার ঠাকুরমা বলত , 'পুরুষের মন ভ্রমরের মতো এক ফুলে কখনও
টিকে থাকে না। এই বাগান ঐ বাগান ঘুরে বেরানোয় তার স্বভাব।' এখন জিরো ফিগার ট্রেন্ড চলছে।
এই যেমন সৌমি আগের মতোই ফিগার ধরে রেখেছে ঠিক কলেজের দিনগুলির মতো।
তাই হয়তো সকালে অফিস বেরোবার সময় সমরের ব্যাগটা পড়ে যেতে,যেই না সৌমি ঝুঁকে
ব্যাগ টা তুলতে যাবে ওমনি ব্লাউজের ফাঁক দিয়ে যতটুকু দেখা যায় ক্লিভেজ।
দেখে সমরের চোখের চাউনি বদলে গিয়েছিল।শ্রীতমা পরিষ্কার বুঝতে পারছিল সমরের
চোখে মুখে এক আনন্দের বিদ্যুৎ ঝলকে উঠছিল।
আবার কেমন মিষ্টি করে হেসে বলল ,"থ্যাংকইউ।" শ্রীতমার রীতিমতো গা-পিত্তির জ্বালা
করছিল কিন্তু সেই মুহুর্ত্বে কিছুই বলতে পারেনি শ্রীতমা।
অবশ্য পরে এ বিষয়ে সৌমিকে কটা কথা শুনাতেও কম করেনি সে,যে তার স্বভাবটা
একই রয়ে গেল।সৌমি অবশ্য বলেছিল 'আরে ভাবিস না তোর বর কে নিয়ে পালাচ্ছি না।'
হো হো করে হেসে উঠেছিল সৌমি । শ্রীতমাও হেসে ফেলেছিল।
অবশেষে বাড়ী ফিরে এল শ্রীতমা দরজার সামনে এসে দাঁড়াতেই ভিতরের আওয়াজ শুনে
বুঝতে পারল সমর ফিরে এসেছে। দরজা খোলাই ছিল আর পারা যায় না সমরকে নিয়ে ।
কতবার বলেছে,সে দরজা সব সময় বন্ধ করে রাখতে । চিরকাল একই রয়ে গেল।
এই সব ভাবতে ভাবতে ঘরে ঢুকে যা দেখল,কোনদিন তা আশা করেনি শ্রীতমা।
তার অবর্তমানের সুযোগ নিয়ে সমর,সৌমিকে চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট দিয়ে চুমু খাচ্ছে।
আর সমরের এক হাত খেলা করছে সৌমির খোলা বুকে। দেখেই মাথা ঘুরে যাবার উপক্রম।
শ্রীতমা " সমর" বলে জোর করে চেঁচিয়ে উঠল। আর তখনই গাড়ীটা জোর করে ব্রেক কষল।
শ্রীতমার মায়েদের বাড়ি পৌঁছে গেছে তারা। এতক্ষণ তাহলে স্বপ্ন দেখছিল শ্রীতমা ।দুঃস্বপ্ন বলাই
ভালো। এসির ঠাণ্ডা হাওয়াই চোখ জড়িয়ে এসেছিল তার, ঘুমিয়ে পড়েছিল কিছুক্ষণ ।
আর তখনই দুঃস্বপ্ন আসে।মোবাইলে টাইম দেখে নিল,
সমরের ফিরবার সময় হয়ে গেছে , যদি বাড়িতে সৌমিকে একা পেয়ে কিছু …।না! দুঃস্বপ্ন আসলে দুঃস্বপ্নই হয়।
তবুও শ্রীতমার মনটা কেমন করতে লাগল তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে।কিন্তু বাবা-মাকেও
পৌঁছে দেওয়া তার দায়িত্ব । চিন্তায় চিন্তায় সমরকে ফোনটাও করা হল না ।ধুর!সৌমিকে না আশ্রয়
দিলেই হত। কিন্তু মুখের উপর না তো বলতে পারে না ।যতই হোক ছোট বেলার
বান্ধবী বলে কথা ।
কেমন যেন টেনশন হচ্ছে ।ধুর ভাল্লাগেনা আর।আজই বলে দেবে বাড়ি থেকে চলে যেতে।
এক সময় বন্ধুত্ব ছিল এখন আর নেই। এখন তার শত্রই। হ্যাঁ, শত্রু তার সুখের সংসারে আগুন
লাগাতে এসেছে।ধুর কি সব আবোল তাবোল ভাবছে সে।
একবার ভাবলো সমর কে ফোন করবে।কিন্তু সৌমি একা আছে ভেবে যদি
সমর তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আর একলা থাকার সুযোগ নেয়। না সে ফোন করবে না সিদ্ধ্বান্ত নিল।
এইসব ভাবতে ভাবতেই সে বাবা মাকে পৌঁছে দিয়েই বাড়ি ফিরল ।
দরজার সামনে এসে ভেতরে আওয়াজ পেয়ে বুঝতেই পারল সমর এসে গেছে।কিন্তু
বাড়িতে না ঢুকে দরজার আড়ালে কান পাতলো সে শুনতে চায় বা বুঝতে চায় যে
সমর কি করতে পারে । সত্যি্ই কি তার অন্য মেয়েদের প্রতি দুর্বলতা আছে।দরজার
ফাঁক দিয়ে সে দেখতে পেল সৌমি তাকে বলছে ,
"শ্রীতমা বাড়িতে নেই।তার বাবা অসুস্থ সে সেখানেই গেছে।" শুনেই সমর বলল,
"ওহ আচ্ছা আমি ফোন করছি।"
"আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন আগে আমি চা করে দিচ্ছি তারপর না হয় ফোন করবেন।"
"আরে না না শ্রীতমা আসুক তারপরেই চা খাওয়া যাবে। আপনাকে ব্যাস্ত হতে হবে না।"
এইরে এবার'তো ফোন করবে রিংটোন বাজবে । শ্রীতমা ফোন টা সুইচট অফ করে দিল।
"না ফোন লাগছেনা ।" বলেই ওয়াশ রুমের দিকে চলে যাচ্ছে সমর ।
সৌমি হাসতে হাসতে
বলল ,
"বউ এর হাতের চা ছাড়া কি পছন্দ নয়। আমিও ভালো চা বানাতে পারি।"
"সে রকম কিছুই নয়। আসলে ওর সাথে ঝগড়া করতে করতে চা খাওয়ার মজাই আলাদা।"
"ওহ তাই!শুধুই ঝগড়া? হাসতে হাসতে সৌমি বলল "বুঝলাম।"
"কি বুঝলেন?"
"অটুট ভালোবাসা।" বলেই খিল খিল করে হেসে উঠল সৌমি।"
সমর শুধুই মুচকি হেসে বলল,
"তা বলতে পারেন।"
কিছুক্ষণ পর সমর বলল,
"আচ্ছা আমি একটু বেরোচ্ছি। একটু সাবধানে থাকবেন।"
"কোথায় চললেন?"
"শশুর মশাই অসুস্থ শ্রী'র ফোনটাও লাগছেনা এমন অবস্থায় কি বাড়ি তে বসে
থাকা যায়।"
"আচ্ছা ঠিক আছে।"
শ্রীতমা যেন চমকে উঠল। তার মন থেকে সন্দেহের ভারি পাথরটা নেমে গেল।
মনের ভিতর যেন এক খুশির হাওয়া বয়ে যেতে লাগল। সমর আগের মতোই
আছে বদলায়নি ।আর সৌমি,তাকে নিয়েও কত খারাপ কিছু ভেবেছে।নিজেকে
কি বোকা বোকা লাগছে এই মুহুর্ত্বে ।সমর মোটেও তেমন মানুষ নয়।সমরের
প্রতি তার শ্রদ্ধা আর ভালবাবাসা আরও বেড়ে গেল।
শ্রীতমা ভবতে থাকে, এভাবে সন্দেহ করা তার উচিত হয়নি এই সন্দেহের
আগুনে কত ঘর সংসার পুড়ে ছারখার হয়ে যায়।ভেঙ্গে যায় সম্পর্কের সব ভালবাসা।
[সমাপ্ত]
ConversionConversion EmoticonEmoticon