short story bengali bus zatri

short_story_bengali_bus_zatri

 

রয়ে গেছে  হাসিটা 

শক্তি সামন্ত  


✍মেয়েটাকে🙎 দেখলেই টিয়াপাখি টিয়াপাখি মনে

হয়। কারন জানা নেই। মাথার মধ্যে এই শব্দটাই ভেসে উঠে।রোগাটে ছিপছিপে গড়ন সাধারণ  চেহারার মেয়ে।🤷‍♀হ্যাঁ, যে মেয়েটার কথা বলছি, সে একটু অন্য ধরনের পেষার সাথে যুক্ত। 

ব্যাডগি'তে 🌇থাকার সময় আমাকে প্রায় বাস

যার্নি করতে হতো। খুব সকালে উঠে বাস 

ধরে একেবারে হুবলি কিংবা ধারবার। অনেক সময় কি হয়! প্রায় কারও সাথে বার বার 

দেখা হলে একই ভাবে একই পরিস্থিতিতে, 

পরিচয় এমনিতেই হয়ে যায়।এক্ষেত্রেও তাই

হয়েছিল।প্রতিবার টিকিট কাটবার সময় 

মেয়েটা কিছু একটা বলে হেসে চলে

যেত। তার খাঁকি ইউনিফর্মের ভিতর রঙিন  চুরিদার, গলা থেকে  লেদারের ব্যাগ কোমড়ের কাছে ঝোলানো।  হ্যাঁ মেয়েটা এই বাসের লেডি কন্ডাক্টর।🚎

খুব সাবলীলভাবেই সে কাজটা 

করে নেয়। 

অথচ প্রথম প্রথম দেখে অবাক হতাম। একজন 

মেয়ে কিভাবে....! যাইহোক কেবল মাত্র এই বাস্টিতেই যাতায়াত করার একটাই কারন ছিল

খুব সকাল সকাল পৌঁছে যেতাম। আর তারাতাড়ি কাজ সেরে আবার ফিরে আসতাম। তাও সন্ধ্যে হয়ে যেত।

মেয়েটার সাথে একটা চোখাচোখি পরিচয়

থাকলেও কখনও সেভাবে কথা বলা হয়ে উঠেনি।এমনিতেই মেয়েদের সামনে একটু আড়ষ্টতা বোধ হয় আমার ।🙇

এখনতো মেয়েটার সাথে দেখা হলেই হাসে,

আমিও হেসে দিই।🤦‍♀ কিন্তু নিজেকে কি দারুণ 

বোকা মনে হয়,সেকথা বলে বোঝানো যাবে না।

জানলার ধারে বসলেই বাজরার🏞 ক্ষেতের 

দিকে কোন অদৃশ্য কারনে চোখ চলে যেত।

এই ধূ-ধূ  প্রান্তরে খাঁখাঁ করে এক চরম শূন্যতা। ইঞ্জিনের বিদঘুটে 🚌যান্ত্রিক আওয়াজ তখন কানে প্রবেশ করে না।

মন তখন কল্পনার জাল বুনতে শুরু করে। এই বাজরার খেতের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি।

কোন অজ্ঞ্যাত জাদুবলে আর 

                                 হুবুহু কলার মতো দেখতে এই সাপটি দেখুন ভিডিওতে



🌌দেখতে পাই, দূরদিগন্তে পাহাড়ের কোল 

থেকে হাওয়ায় ভেসে আছে মেয়েটা।তার 

দু-পাশে উড়ছে অসংখ্য প্রজাপতি। 

তার নাটকীয় আহবানে হাত বাড়িয়েছি।একটা

মিস্টি ডাকে ঘুম ভেঙে গেল। আরে এতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম। মেয়েটা হাত বাড়িয়ে টিকিট 

দিল ৯৬টাকা। আমার কাছে খুচরো ছিল না।

তাই ৫০০টাকার একটা নোট দিলাম। 

মেয়েটা বাকি টাকা ফেরত না দিয়েই চলে গেল।

এবং ইশারা করে বলল পরে দিচ্ছি।আমি আশস্ত হয়ে রইলাম। আবার চোখ জানলা

দিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে ব্যাস্ত।আজ মেয়েটাকে অন্যরকম লাগছে।মনে প্রেম প্রেম

জাগছে।তার মিস্টি ডাকটা মনে বুকে কেমন 

একটা চিনচিনে ব্যাথা ধরিয়ে দিয়েছে।

বাসের ব্রেকের ঝাঁকুনিতে  হঠাৎ ঘোর কাটতে

দেখলাম একটা কালো স্ট্যচু। বিঘৎ ঘোড়ার

উপর তরোয়াল উঁচিয়ে যুদ্ধের ভঙ্গিমায় রানি 

চেন্নাম। বুঝলাম হুবলি পৌঁছে গেছি। নেমে পড়লাম মনেই ছিল না ব্যালেন্সটা আর ফেরত নেওয়া হয়নি। চলে যেতে পা বাড়িয়েছি,এমন সময় মেয়েটা ছুটে এসে সামনে দাঁড়িয়েছে হাসতে হাসতে বাকি পয়সাটা ফেরত দিল। আমি থ্যাঙ্কিউ জানালাম।খুচরো পয়সাটা দিতে গিয়ে একটা 

দু-টাকার কয়েন মাটিতে পড়ে গেল।মেয়েটা ঝটপট ঝুঁকে পড়ে পয়সাটা তুলতে গেল। দেখলাম তার খাঁকি পোশাকের ভিতর গলা থেকে ঝুলে পড়েছে মঙ্গলসূত্র। এক মুহুর্তের 

জন্যে মনটা খারাপ হয়ে গেল।তারপর বাস ছেড়ে চলে যাচ্ছে।মেয়েটা আবার একবার ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। ভাবলাম 

দিবা স্বপ্নতো এমন বহু দেখা যায় নিজেকে 

স্বান্তনা দিতে দিতে বাসস্টপ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি।তার ফেরত দেওয়া টাকা গুলো পকেটে

গুঁজতে গুঁজতে ভাবলাম। হাসিটুকুই রয়ে যাক বুক পকেটে। 

👥


Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন