bangla uponyas vul station a neme 39th episode

           
bangla_uponyas_vul_station_a_neme_39th_episode

 ভুল স্টেশনে নেমে

                         সমীরণ সরকার

                 (৩৯ তম পর্ব)

শেষ পর্যন্ত স্কুলে ভর্তি হতে পেরেছিলি?
----- হ্যাঁ ,আর সেটা হয়েছিল বিশুমামার একান্ত প্রচেষ্টায়। বিশুমামা আমাকে নিয়ে যেদিন হেডমাস্টার মশাইয়ের বাড়িতে গেছিল,  তারপর থেকে বিশু মামা হেডমাস্টারমশাই বাড়িতে, ওই যে কি বলে না, একেবারে বডি ফেলে দিয়েছিল। নিয়ম করে সকাল বিকাল দুবার  করে নাকি হেডমাস্টার মশায়ের বাড়িতে যেত বিশু মামা ।এসব কথা অবশ্য আমি অনেক পরে জেনেছি ।স্কুলে ভর্তি হওয়ার বেশ কিছুদিন পরে ।
 হেডমাস্টার মশায়ের বাড়িতে পড়তে গিয়ে সব জেনেছিলাম, ওনার স্ত্রীর মুখে ।
----তুই হেডমাস্টার মশাইয়ের কাছে প্রাইভেট টিউশনি পড়তিস ?
---না না, ঠিক ওইভাবে নয় ।স্কুলের উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যারা একটু মন দিয়ে লেখাপড়া করতো ,কিন্তু অর্থের অভাবে প্রাইভেট টিউশনি পড়তে পারত না, তাদের তিনি ইংরেজি আর অংক এই দুটো বিষয় বিনি পয়সায় পড়াতেন। এটা আমি স্কুলে পা দিয়েই  শুনেছিলাম। সত্যি কথা বলতে কি, ওই দুটো বিষয়ে আমার একটু প্রবলেম ছিল।
 কিন্তু বিশু মামা কে প্রাইভেট টিউশনি নেওয়ার কথা বলতে পারছিলাম না । বললেই হয়তো বিশু মামা  হাসি মুখে সব ব্যবস্থা করে দিত, কিন্তু তাতে বিশুমামার উপরে খুব চাপ দেওয়া হতো।
তাই একদিন স্কুলের পরে হেডমাস্টার মশায়ের বাড়িতে চলে গেলাম ।
   উনি তখন   ওনার বাড়ীর উঠোনে, একটা আরাম কেদারায় বসে,  চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে একটা খবরের কাগজ পড়ছিলেন বেশ মন  দিয়ে।vul station a neme [পূর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন]
আমি   ওনাকে প্রণাম করে উঠে দাঁড়াতেই,আমাকে দেখে  একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি? এসময় আমার কাছে? কিছু বলবে?
কিভাবে কথা শুরু করব বুঝতে পারছিলাম না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম ।
উনি বললেন ,তুমি বিশুর ভাগ্নি নন্দিনী তো?
----- হ্যাঁ স্যার ।
---- দাঁড়িয়ে আছো কেন? বোসো।
কথা শেষ করেই  উনি নিজে   উঠে ,একটা ছোট কাঠের টুল নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, বস এখানে। স্কুল থেকে বাড়িতে গিয়েছিলে ?
----না স্যার,বাড়ী যাইনি।
---- নিশ্চয়ই খুব খিদে পেয়েছে তোমার।
-----  আমি বাড়িতে গিয়ে খাব স্যার ।
---না না, বাড়ি যেতে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে। তারপর তিনি সম্ভবত তাঁর স্ত্রীকে ডাকলেন, অরুনা ,  এদিকে একটু এসো ।vul station a neme [পূর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন]
মিনিট খানেকের মধ্যেই একজন বিবাহিতা মহিলা এসে দাঁড়ালেন সামনে ।কাপড়ের আঁচলে হাত মুছতে মুছতে তিনি বললেন ,ডাকছো কেন? -----শোনো ,এই মেয়েটির নাম নন্দিনী ।ও আমার স্কুলে ক্লাস ইলেভেনে পড়ে। ওর আরেকটা পরিচয় আছে। ও কুমার পুরের বিশুর ভাগ্নি। ---------কুমারপুর এর বিশু, তার মানে সেই ভদ্রলোক তো, যিনি প্রায় দুবেলা......?
 উনি কথা শেষ করার আগেই হেড মাস্টার মশাই হাত দেখিয়ে ওনাকে থামিয়ে বললেন, হ্যাঁ হ্যাঁ ,সেই বিশু। নন্দিনী মনে হয় আমাকে কিছু বলবে বলে এসেছে ।স্কুল থেকে বাড়ি যায়নি এখনো।। নিশ্চয়ই খুব খিদে পেয়েছে ওর। তুমি ওকে কিছু খেতে দাও তো আগে। তারপর আমি ওর কথা শুনবো।
 ভদ্রমহিলা আমাকে বললেন, এসো আমার সঙ্গে, রান্নাঘরে এসো।
 হেড মাস্টার মশাই বললেন, যাও নন্দিনী, আগে কিছু খেয়ে এসো। তারপর তোমার কথা শুনবো। ভদ্রমহিলা আমাকে রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন ,কি খেতে ভালোবাসো তুমি, মুড়ি, চিঁড়া না অন্য কিছু ?
আমি বললাম ,না না কাকিমা ,আমি এখন মুড়ি খাব না ।
----বেশ  তাহলে একটা ডিমের ওমলেট করে দিই তোমাকে।vul station a neme [পূর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন]
উনি আমাকে বসার জন্য একটা মোড়া এগিয়ে দিলেন ।কিছুক্ষণের মধ্যেই একটা কাঁসার ছোট ডিশে একটা ডিমের ওমলেট, দুটো রসগোল্লা ,দুটো বড় পাকা কলা সাজিয়ে  খেতে দিলেন আমায়।
---আমি এত খেতে পারব না কাকীমা।
আমি আপত্তি করলেও কোন কথা শুনতে চাইলেন না ।একরকম জোর করেই সবটা খেতে বাধ্য করলেন আমাকে।
 হেডমাস্টার মশাই যেন অপেক্ষা করছিলেন আমার জন্য। খাওয়া শেষ করে ওনার কাছে এসে দাঁড়াতে উনি বললেন, এবার বল, কেন এসেছ তুমি?
 সমস্ত ভয় দ্বিধা কাটিয়ে আমি বললাম, স্যার, ,আমি শুনেছি যে ,আপনি অনেক গরিব ছাত্রছাত্রীকে ইংরেজি আর অংকটা দেখিয়েে দেন  ।
--হ্যাঁ ,ঠিকই শুনেছো তুমি ।vul station a neme [পূর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন]
----দয়া করে আমাকেও যদি ওই দুটো সাবজেক্ট একটু  দেখিয়ে দেন তো......
--- নিশ্চয়ই দেখিয়ে দেবো। স্কুলে যাওয়ার  আগে সকালের দিকে আসতে পারবে তুমি?
---- অবশ্যই পারব স্যার ।
----তাহলে কাল  সকালে সাতটার মধ্যে আমার এখানে চলেে এসো ।
---তাই হবে স্যার।
বাড়ি ফেরার পথে বিশুমামার দোকানে গেলাম ।বিশু মামা তখন দোকানেই ছিল।  আমার মুখে খবরটা পেয়ে  খুব খুশি হলো বিশু মামা ।বাড়িতে ফিরে দেখি, আমি তখনো স্কুল থেকে ফিরিনি দেখে মামিমা মাকে যা তা বলে অপমান করছে ।মায়ের অপমান দেখে খুব রাগ হয়ে গেলো আমার। আমিও অগ্রপশ্চাৎ না ভেবে পাঁচ কথা শুনিয়ে দিলাম মামীমাকে 
---তারপর?


চলবে...

Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন