মহাভারত যুদ্ধ হয় বন্ধু যখন শত্রু হয়
সুমন্ত দে
ভারতবর্ষের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থ মহাভারত। এই গ্রন্থে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রয়েছে। তাদের মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলো অস্ত্র গুরু দ্রোণাচার্য। মহাভারতে দুটি পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। একদিকে ছিল দুর্যোধনের নেতৃত্বে কৌরব পক্ষ ও অপরদিকে যুধিষ্ঠির এর নেতৃত্বে পান্ডব পক্ষ। সবথেকে উপভোগ্য বিষয় হলো দু'পক্ষকেই অস্ত্র শিক্ষা দিয়েছিলেন দ্রোণাচার্য। কুরুক্ষেত্রের ভয়ানক যুদ্ধে তিনি লড়েছিলেন তাঁর অন্যতম প্রিয় শিষ্য অর্জুনেরই বিরুদ্ধে!
কিন্তু মহাভারতের যুদ্ধ কেন হয়েছিল? অনেক কারন থাকলেও এর বীজ বপন হয়েছে যখন বন্ধু শত্রু হয়।
বাল্যকালে দ্রোণাচার্যের প্রিয় বন্ধু ছিল দ্রুপদ। সময়কাল অতিবাহিত হয়ে গেলে তারা একে অপরের শত্রুতে পরিণত হয়।দ্রুপদ রাজা হয়ে তাঁর বাল্যকালের বন্ধু দ্রোণাচার্যকে অপমান করেছিল। দ্রুপদ ক্ষমতা বলে বলিয়ান হয়ে নিজের বাল্যবন্ধুকে তুচ্ছ জ্ঞান করেছিল।অথচ দ্রুপদের পিতা উত্তরাঞ্চলের রাজা পৃষদ এবং দ্রোণাচার্যের পিতা ভরদ্বাজ একে অপরের বন্ধু ছিলেন। বন্ধুর অপমানে দ্রোণাচার্য প্রতিজ্ঞা করেছিল এর উচিত জবাব তিনি দেবেন।পরবর্তীকালে পাণ্ডব ও কৌরবদের অস্ত্রশিক্ষা শেষ হলে তাঁরা গুরু দ্রোণাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গুরুদক্ষিণা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। গুরু তখন তার শিষ্যদের কাছে গুরুদক্ষিণা হিসেবে দ্রুপদকে পরাজিত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাণ্ডব ও কৌরবদের যৌথবাহিনী অর্জুনের নেতৃত্বে দ্রুপদকে পরাজিত করে। এভাবে দ্রোণাচার্য পূর্বের অপমানের জবাব দেয়। দ্রুপদ রাজ্যের অর্ধেক অংশ দখল করে নেয় । এর ফলে দ্রুপদ বন্ধুর প্রতি প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয় এবং এই অপমানের জবাব দেওয়ার চেষ্টারত থাকে । এজন্য সময় এবং সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। পরবর্তীতে দ্রুপদের পুত্র ধৃষ্টদ্যুম্নর হাতে দ্রোণাচার্য নিহত হয়েছিলেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হ'ল দ্রুপদ ছিলেন দ্রৌপদীর পিতা । দ্রোণাচার্যের অন্ধ পুত্রস্নেহ এবং পান্ডবদের দ্রৌপদীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলে দ্রোণাচার্য কৌরবদের হয়ে ও দ্রুপদ পান্ডবদের হয়ে লড়াই করে।
Tags
প্রবন্ধ
