একটা অনুগল্প নিঃশব্দ আকাশ



একটা অনুগল্প নিঃশব্দ আকাশ 

শক্তি সামন্ত

 চারপাশে এক অদ্ভুত নীরবতা বিরাজ করছে। পাড়ার ছেলেরা তখনও কেউ আসেনি, ক্লাবের সামনের অশ্বত্থ গাছটার দিকে হাঁটতে হাঁটতে একটু ঘোরাঘুরি করছিলাম।প্রতিদিনের মতো ক্লাবের আড্ডায় গিয়েছিলাম সেদিনও দুপুরবেলা।

একটা অনুগল্প নিঃশব্দ আকাশ 

 হঠাৎ কানে  এল গাছের পেছনে  লাইব্রেরির দিক থেকে একটা ডানা ঝাপ্টানোর আওয়াজ । কাছে গিয়ে দেখি, একটা পাখি মাটিতে পড়ে ছটফট করছে, ডানাগুলো অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে বেঁকে আছে। কৌতূহল বশত  ধীরে ধীরে পাখিটাকে হাতে তুলে নিলাম। দেখলাম একটা ফিঙে,  ওর  ডানা দুটো এমন ভাবে ভেঙে গেছে যে একদম ওড়া সম্ভব নয়।

মনের ভেতর তখন একধরনের  দুখজনক অনুভূতি হচ্ছিল। এমন হলো কি করে? হয়তো কোন শিকারী প্রাণী ধরেছিল, বাগে আনতে না পেরে ছেড়ে দিয়েছে।

একটা অনুগল্প নিঃশব্দ আকাশ 

 ভাবছিলাম, হয়তো পাখিটাকে বাঁচাতে পারব। ঠিক সেই মুহূর্তেই, পেছন থেকে পরিচিত এক কণ্ঠ শুনতে পেলাম—“ছেড়ে দে, ও আর বাঁচবে না। অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করলাম। গাছের ডালে তুলেও দিয়েছিলাম কিন্তু বেচারা, আর উড়তে পারলো না।” 

চমকে উঠে পেছনে তাকালাম, দেখি বাবা। তার চোখে-মুখেও একটা গভীর দুঃখ আর আফসোসের ছাপ। হয়তো জীবনের অনেক কিছু হারানোর অভিজ্ঞতা থেকেই কথাগুলো বলছেন। আমি কিছু বললাম না, বাবার দিকে চোখ তুলে একবার তাকিয়ে আবার পাখিটার দিকে মন দিলাম। হাতের পাখিটা তখনো নড়ছিল, বাঁচবার আকুল প্রয়াস করে যাচ্ছে। এবং যন্ত্রণায় ছটফট করছে। কিন্তু জানি না বাঁচানোর কোনো উপায় আছে কি না। 

একটা অনুগল্প নিঃশব্দ আকাশ 

মুহূর্তটা যেন থমকে গিয়েছিল। বাবার কথায় এক অমোঘ সত্য লুকিয়ে ছিল—"সবকিছু বাঁচানো যায় না, সব ক্ষতির পূরণও সম্ভব নয়। কিছু জিনিস প্রকৃতির হাতে ছেড়ে দেওয়াই শ্রেয়।" 

একটা অনুগল্প নিঃশব্দ আকাশ 

একটা অনুগল্প নিঃশব্দ আকাশ 

Newest
Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন