Bangla Premer Uponnash মন ভাঙ্গনের পাড়ে Episode 5

Bangla_Premer_Uponnash_মন_ভাঙ্গনের _পাড়ে_Episode_5


মন ভাঙ্গনের পাড়ে 

শক্তি সামন্ত 

[পাঁচ]  

ওরা তিনজন 

দেখতে দেখতে শীত ফুরিয়ে আসছে। দখীনা বাতাস বইতে শুরু করেছে ।
রূপকের হাতে কোন জব নেই এক প্রকার বেকার। যেকোন একটা কাজ পেলেই হল। এই 
আশাতেই আছে রূপক ।আজকাল শরৎ রচনা সমগ্র পড়ে দিন কাটছে তার।বিশেষ 
করে সকাল আর দুপুরের সময়টা।বিকেলটা কোন মতেই ঘরে মন বসে না।

এক অস্থির ভাবনা মন কেমনের পাড়ে নিয়ে যায়।যেন দূর দিগন্তে নতুন বসন্তের ডাক। 
বেরিয়ে পড়ে সে ঘর থেকে। বিকেলের স্নিগ্ধ হাওয়ায় মনটা ভরে যায় নদীর ধারে 
গিয়ে । কিন্তু একা একাতো আর যেতেও ভাল্লাগেনা।বিকু আর উজান সঙ্গি  হলে 
ভালোই হয়।মনের কিছু কথা বলে মনটা একটু হালকা হয়ে যায়।সেই পরিচিত, 
বটতলায় এসে পড়েছে সে।বেশ ফুরফুরে হাওয়া ভাললাগছে। 

বসন্ত কালের এই দক্ষিণা বাতাসে। বটতলায় ছেলে-বুড়ো সবাই বসে আড্ডা দেয়, 
তাস খেলে আর ইয়ং ছেলেরা 
গল্প গুজব ইয়ার্কি-ফাজলামি আর জটলা করতেই ভালবাসে এই বটতলায়। হ্যাঁ , 
আড্ডা দেওয়ার সেই কুখ্যাত জায়গা। কুখ্যাতই বটে । 

Bangla Premer Uponnash মন ভাঙ্গনের  পাড়ে Episode 5 

 
কাছে দূরের পাড়া বা বেপাড়ার যে কোন কম বয়সি মেয়ের বাবা মা'র কাছে এই জায়গাটার 
একটা বদনাম আছে । কম  মেয়েরা একটু সামলেই  চলে এই জায়গাটা। আসলে ছেলেরা
 যে খুব খারাপ ব্যাবহার করে তা কিন্তু নয়। ভুলবুঝাবুঝির  ফলে কয়েকবার ঝামেলা 
বাধে। এই যেমন সেবার কালীপূজোর কয়েকদিন আগে মূর্তি গুলোকে রোদে শুকোতে  
দিয়েছিল কুমোর ।হঠাৎ বৃষ্টি এসে যাওয়ায় মুর্তিগুলোকে কয়েকজন মিলে ধরা ধরি করে 
ক্লাবের ভিতরে রাখার ব্যাবস্থা করছিল।

 স্বাভাবিকই একটু চেঁচামেচি হবেই।সোম  
একটু জোর গলায় বলে উঠে , "আরে ডাকিনীটাকে আগে সরিয়ে রাখ ।" গণ্ডগোলটা  
তখনই বাধে। রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল উর্মিলা ।ব্যাস,উর্মিলা ভেবে নিল তাকেই ডাইনি বলা 
হয়েছে।সে কি গন্ডগোল।শুধু যে তার সাথে তা নয় তার বাবা, কাকারা এসে ঝামেলা 
করে যায়।সোম জোর গলায় চেঁচিয়ে গলা ফাটিয়েও বুঝাতে পারেনি যে কথাগুলো তাকে 
উদ্দেশ্য করে বলেনি সে। সেইযে একবার অপবাদ রটলো। 

একটা নাম খারাপের লেবেল লেগে গেল।   
শুধু সেবারই নয় আরও একবার ,বিকুর সাথে  ভীষণ ঝামেলা বাধে এক মেয়ের বাবা, মা'র সাথে।বিকু    
এক গুচ্ছ কাশফুল নদীর পার থেকে নিয়ে আসে ।বিকু সবাইকে বুঝিয়ে বলছে এই কাশ 
ফুলের ডাঁটি গুলো দিয়ে কিভাবে ঝাড়ু বানানো যায়।তখনই বটতলার পথে কৃষ্ণা আসছিল  
লাল সাইকেলে খোলা লম্বা চুল পেছন দিকে ঝটপট করে উড়ছে।এমনিতে লম্বাচওড়া 
মেয়েটা বেশ গম্ভীর আর শান্ত স্বভাবের সাইকেল চালানোই বেশ সাবলীল। 

Bangla Premer Uponnash মন ভাঙ্গনের  পাড়ে Episode 5 

প্রায় রোজ 
সাইকেল চড়ে স্কুলে যায়।কেউ তার পিছু লাগেনা। হয়ত সাহস পায়না। 
কিন্তু সেদিন কি হল কে জানে, বিকুর হাত থেকে কোন রকমে  কাশ ফুলের গুচ্ছ 
থেকে ফুলের রেণুর মতো সূক্ষ্ম অংশ গুলো হাওয়াই তুলোর মতো উড়ে তার নাকে 
মুখে একেবারে বিচ্ছিরি ব্যাপার। একটু  দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেতাই বলে অপমান 
করল বিকুকে। এমনিতে শান্ত স্বভাবের মেয়েটা  রাগে না বললেই চলে।

সম্ভবত সেদিনের চিটচিটে গুমোট গরমে সাইকেল চালিয়ে তিতিবিরক্ত হয়েছিল মেয়েটা  
তার উপর ফুলের গুঁড়ো গুলো নাকে মুখে ঢুকতে আরও তার কষ্ট হচ্ছিল নিশ্চয়। তাই রেগে 
গিয়েছিল।তখনও কৃষ্ণার রাগ থামেনি গজগজ করে আবার সাইকেলে উঠে চলে যাচ্ছে।
আবার একবার রাগত চোখে ফিরে তাকাল ।

 বিকু হাসছিল, যদিও সে ব্যাপারটা  
ইচ্ছাকৃত করেনি ।অপমানের ভাষা গুলো তার মনে কোন প্রভাবও পড়েনি। ঘটনাটা 
এখানেই থেমে থাকেনি ।পরদিন কৃষ্ণার বাবা, মা  এসে আবারও গণ্ডগোল করে 
গিয়েছিল।বিকুও বিচ্ছিরি ভাবে তর্কবিতর্ক করে যাচ্ছিল। বিকুর সাথে পেরেই উঠছিলেন 
না ওনারা। 

ভাবতে  খুব খারাপ লাগলেও চুপ করে ছিল রূপক।পাড়ার এক জেঠু চোখ পাকিয়ে বিকুকে শাষন করেছিল 
আবার কৃষ্ণার বাব-মাকে  বুঝিয়ে শান্তও করেছিল "ছেলে ছোকরার দল দুষ্টুমি করে  
ফেলেছে।আমরাতো আছি নেক্সট টাইম কিছু হলে দেখব।" বলে স্বান্তনা দিয়ে মিটমাট করে দিয়েছিল।      
 
  গরম পড়েছে বেশ ভালোই।কেমন যেন গুমোট হয়ে আছে গাছের পাতা একদম  
 নড়ছেনা । এমন ওয়েদার হলেই ঝড় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। রূপক বসে আছে 
বটতলার ছায়াই এমন সময় বিকু এসে বলল, '''আরে রুপক ঘরে কি করিস  বেরোস 
না কেন।''

রূপক বলল,''এইতো চল  নদীর ধারে যাব খুব গরম আজ।'' 
একটু থেমে বিকু বলল, 'চল উজানকে ডেকে নিয়ে আসি।' 
বিকু রূপকের ছোট বেলার বন্ধু।রূপকের  থেকে বছরখানেকের বড় হবে। রূপক 
তখন শিশু শ্রেণি বিকু সে বছরই ওয়ানে ভর্তি হল  পাশের বাড়ির সোমের সাথে। 
পরের বছর বিকু  যখন ক্লাস টুয়ে উঠেছিল রূপক আর অনুমিতা ওয়ানে ।তারপর 
ক্লাস টুয়ে বিকু ফেল করলে  রূপকও একসাথে একই ক্লাস হয়ে যায়। 

সেই থেকেই বন্ধুত্ব। উজানের অন্য স্কুল তাই একই পাড়ার ছেলে হলেও ওদের বন্ধুত্ব অনেক পরে হয়।   
তিনজনে বসে আছে ওরা পাড় ভাঙ্গা নদীর ধারে । এই নদী পাড় ওদের সব জ্বালা  
জুড়িয়ে দেয়। তিনজনেরই এক জ্বালা  বেকারত্ব। বাড়িতে অভাব নেই যদিও। কিন্তু 
একটা সময়ের পর একটা কর্মজীবন খুঁজতেই হয় সবাইকে। 

হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছে 
সেই জীবন।অনেক সময় এমন হয় সেই জীবন খুঁজে পাওয়ার আগেই জীবনসাথি 
একেবারে দরজায় এসে দাঁড়ায় । তখন না পারে তাকে ফিরিয়ে দিতে আর না 
পারে জীবনে জায়গা দিতে।   এমনই হয়েছে  বিকুর সাথে । পারার এক মেয়ে আনার প্রেমে পড়েছে সে। লাইফ 
নিয়ে চিন্তিত একটু  । 

কিছু একটা কাজ করে সে চালিয়ে নিবে কিন্তু সেই কিছু একটা কী?
উজানকেও বেশ চিন্তিত লাগছে আজ। বিকুর জন্যেই হয়ত।রূপক বলল, "ভুলে যা আনাকে,আগে জীবনে 
একটা কিছু কর।"নরম দূর্বা ঘাসের ডাঁটি দাঁত দিয়ে কাটতে কাটতে বিকু বলল, "মোড়ের 
মাথায়  আমদের যে জায়গাটা আছে ওখানে একটা সাইকেল সারানোর দোকান এবং সাইকেলের 
ছোট করে শোরুম  খুলবো।"উজান হাসতে শুরু করল।  

রূপক বলল, "তাতে  ক-পয়সা রোজগার করবি? দেখছিস না আজকাল যে পরিমাণে 
মোটরসাইকেল চলছে তাতে ভবিষ্যতে কেউ সাইকেল চড়বে বলে মনে হয়?"
উজান হাসি থামিয়ে বলল,"শালা আনার বাপ যা টেটিয়া লোক তোকে 
দূর দূর করে তাড়াবে।" 

মনটা খারাপ হয়ে গেল বিকুর মুখের হাসি ম্লান হয়ে সংকুচিত হয়ে গেল । রেগে গিয়ে  
এইবার উজানের গুশটি উদ্ধার করছে । রূপক চুপ করে সাইড হয়ে বসল একটুতেই রেগে 
যাওয়া স্বভাব বিকুর , একটুতেই মাথা গরম,আনাড়ি টাইপের ছেলে। যখন শান্ত থাকে তার 
মতো ভালো বুঝি আর কেউ হয় না।রেগে গিয়ে উঠে পালিয়ে এল  বিকু নদী ধার থেকে। 
তারা দুজনেই বসে রইল । রূপক ভালো মতো জানে এ রাগ তার দীর্ঘসময় 
স্থায়ী হবে না। 

অনেকক্ষণ চুপ করে বসেছিল দুজনেই।রূপক দেখল উজানের মুখটাও ম্লান 
হয়ে গেছে,বিকেলের সূর্যের মতো।রূপক হাত পা ছড়িয়ে বসল। তখন সন্ধ্যা নামছে  
নদীর জলে। বহুদূর থেকে  
হুহু হাওয়া নদীর জল তিরতির করে কাঁপিয়ে  ভরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। রূপক আনমনে বলে 
যাচ্ছে, "আচ্ছা উজান,যেমন আমরা এই প্রকৃতির রূপ দেখে মুগ্ধ হই ।তেমনই কি এই গাছ ,
এত হাওয়া্‌,এত বড় আকাশ ,আকুল জল যা নিরন্তর বয়ে যাচ্ছে, এই পৃথিবী   
যার ভিতরে আমরা অনায়াসে বেঁচে আছি।যার সানিদ্ধ্যে আসার আকুল ইচ্ছা আমাদের 
টেনে আনে বারবার এই নদীর ধারে। এই বিস্তীর্ণ প্রকৃতি মাঠ-ঘাটও কি 
আমাদের কথা ভাবে? আমাদের দুখে দুখি হয় কোনদিন!"  
 
উজান তার কথার কোন মানে বুঝে না। শুধু ভ্রু কুঁচকে, মুচকি হেসে, সম্মতি জানায়।
একটু থেমে আরও বলে উঠল , "জানিস'তো আমাদের জীবনও এক একটা নদীর মতো।
আর এই মন হল তার পাড় একটুতেই ভেঙ্গে পড়ে। আর আমরাও সেই 'মন ভাঙনের পাড়ে' 
এসে থমকে আছি ।পারলে এখান থেকে নতুন গতিপথ পাব।নইলে হারিয়ে যাব কোন মরুর বুকে মুখ থুবড়ে ।    

বিকু বেশিক্ষণ অভিমান করে থাকতে পারে না।সকাল হতেই মুখোমুখি উজানের।গোঁফের 
নিচে মুচকি হেসে পাশে এসে বসল।খুব সাধ করে গোঁফ রেখেছে প্রথম থেকেই কামিয়ে 
ফেলেনি।তার মোলায়েম সুন্দর গোঁফের জন্যে মনে মনে একটু গর্বও করে। তবে সম্পূর্ণ 
গালে দাড়ী বেরোয়নি বলে তার আফসোস একটা রয়েই গেছে।

রূপক বলে উঠল , "এইতো আমাদের তেলেগু হিরো এসে গেছে।" 
উজানও তার এই গোঁফের জন্যে বিভিন্ন সময় সাউথের হিরো বা তেলেগু হিরো বলে খেপিয়ে থাকে। 
এবার কাঁধে হাত দিয়ে রূপক বলল,"রাগ ভেঙেছে।" 
"রাগ কিসের?"বিকু এমন ভাবে জবাব দিল যেন কিছুই হয়নি কাল।  
তখনো চুপ করে আছে উজান কিছুই বলছে না।
রূপক বলল ,"কালকের কথা ভুলে গেছিস তাহলে।"
আরও বলল,"দেখ,উজান কিন্তু রাগ করেছে যে ভাবে গালমন্দ করলি কাল উচিত হয়নি 
তোর।" 

এরপর আরও কিছু বলে, উজান ঝট করে উঠে পড়ে বিকুকে জড়িয়ে ধরল।  
রূপক বিস্ময়ে এবং আনন্দে হাততালি দিয়ে বলল ,"এই না হলে বন্ধু।" দুজনেরই পিঠ চাপড়াল। 
"চল চা খেয়ে আসি গনেশদার দোকান থেকে " বলেই রূপককে বাইক নিতে বলল,উজান। 
ওদের আর একটা টাইম পাশের জায়গা হল এই গণেশ দার চায়ের দোকান।প্রায় রোজ  
ওরা গণেশদার চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে সাইকেল নিয়ে একেবারে নদীর ধার।
রূপকের চা খাওয়ার নেশাতো ছিলই ছোটবেলা থেকে। গণেশদার দোকানে আসাটা 
ধরিয়েছিল উজান।সেবারও তিনজন সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে ছিল উজান হঠাৎ নেমে 
পড়ে এই চা দোকানের সামনে। 

বিকু জিজ্ঞেস করেছিল, 
"কিরে নামলি কেন?" 
উজান যেন কতইনা পরিশ্রান্ত হাঁফাতে হাঁফাতে বলেছিল ,
'দাঁড়া চা খাব।'
ঠোঁটকাটা স্বাভাবের বিকু বলেছিল , 
"শালা যেই বৌদিকে দেখেছে অমনি চা খাওয়ার শখ উতলে উঠল।"  
গণেশ দা সামনেই চপ ভাজছিল, শুনতে পেয়েছিল কিনা কে জানে। তবে যেভাবে 
তাকাচ্ছিল ওদের দিকে বোধ হয় শুনতে পেয়েছিল।হয়ত খদ্দের ভেবেই চুপ করে ছিল । 
রূপক ভয়ে আর বিকুর খারাপ আচরণের জন্যে লজ্জিত বোধ করে একটু রাগত স্বরে বলেছিল,
"চুপকর শালা, শুনতে পাবে।"  

বৌদি তিন কাপ চা করে দিলে উজান আর বিকু সিগারেট ধরায়।সিগারেটের ধোঁয়াই  
রূপকের  একটু অস্বস্তি হলেও ওদের জন্যে  সহ্য করতে হয়। তারপর থেকে 'বৌদির 
চায়ের দোকানে প্রায় রোজ চা খেতে যাওয়া শুরু।খুব লক্ষ্মীমন্ত সাদামাটা স্বভাবের মেয়ে। 
স্বামি-স্ত্রীতে চায়ের  

দোকানটা চালায়।বড়লোকের মেয়ে হলেও অহংকার নেই এতটুকুও।একবার জিজ্ঞেস 
করেছিল উজান ,"বড়লোকের মেয়ে হয়েও চায়ের দোকানে কাজ করছ?" 
বৌদি হেসে খুব সাধারণ জবাব দিয়েছিল সেদিন," কি আছে নিজেদেরইতো দোকান। 
আর কাজ করা কি অপরাধ?"
সে জবাবে খুশি হয়েছিল রূপকরা । 
 
এমন  মেয়ে সাধারনত হয় না। যে কোন পুরুষই সুখি হতে পারে এমনটা ভেবেই,   
বিকু সকৌতুকে বলেছিল,"বৌদি তোমার  বোন থাকলে বলবে।" 
বৌদি শুধুই হেসেছিল,"না আমার কোন বোন নেই।"

"শালা তোর ভাগ্যটাই খারাপ।" চায়ের শেষ অংশটা মুখে দিয়ে উজান বলেছিল।  
তারপর সেই যে চায়ের স্বাদ লাগলো জিভে আজও ছাড়তে পারল না কেউ।
 আজও  তিনজন বসে আছে।যাইহোক ভালোলাগছে একটু, বিকুর মনটা আজ ভাল আছে। 
বড় অভিমানী ছেলে একটু বদ রাগিও। এটাও ঠিক যে ও রূপককে খুব ভালবাসে যেকোন 
বিষয়ে সাপোর্ট করে। 
বৌদি তিন কাপ চা এনেদিল।চায়ের কাপে প্রথম চুমুক দিয়ে রূপক বলল,"কিরে আনার কি 
খবর? দেখা হয়েছিল?"
"দেখাতো রোজের হয়। আজ সকালেও হয়েছিল।কিস করে এসেছে দেখছিস না মনটা কেমন 
উড়ু-উড়ু।"

উজান বেশ রসিয়ে রসিয়ে কথা গুলো বলল।বিকু এবার রেগে যাওয়ার অভিনয় 
করে"লাথি মারবো।"বলেই ফিক করে হেসে দিল।রূপকও হেসে উঠল বলল , " তবে গাছে উঠতে 
যাসনা দ্বিতীয় বার পা ভেঙ্গে খোঁড়া হয়ে যাবি শেষে ।    
একটু থেমে আবার বলল, আচ্ছা একটা কথা বলার ছিল ,কাল বাইরে যাচ্ছি।একটা কাজ পেয়েছি।"
বিকু জিজ্ঞেস করল, "কোথায় যাবি?" 
রূপক বলল, "ব্যাঙ্গলোর। "আবার কবে দেখা হবে কি  না হবে কে জানে!"    
"এইভাবে বলছিস কেন?" উজানের কথায় মন খারাপের সুর।
বিকু ভ্রু কুঁচকে বলল, "হঠাৎ?"

রূপক বলল,"হ্যাঁ যেতেতো হবেই, কত দিন আর বসে বসে খাবো।"   
"মন খারাপ করে দিলি।" বলে বিকু চুপ করে বসে আছে।রূপকের মুখেও কোন কথা নেই। 
উজান রূপকের দিকে তাকিয়ে কিছু ভেবে বলল, "সুনিতার কি হবে?" 
রূপক বলল, "কি হবে মানে?কিছু কি হয়েছে? শালা আজ পর্যন্ত বলে উঠতেই পারলাম না।"  
"ও কিন্তু তোকে লাইক করে।" 

"শালা তুই কি জ্যোতিষী নাকি? মনের কথা বুঝে যাস!" বাংলা সিনেমার সেই সুপার হিট 
ডায়লগটা মনে পড়ে গেল রূপকের বলল,"যখন অভাব দরজায় কড়া নাড়ে ভালোবাসা 
জানলা দিয়ে ফুড়ুৎ হয়ে যায়।বুঝলি?"
"ওসব সিনেমার কথা বাদ দে।"ঝট করে জবাব দিল উজান "কাতুদাকে দেখেছিস প্রেম 
করেই বিয়ে করল।আজ তার সাজানো সংসার ।
" উঠতে উঠতে রূপক বলল, 

"ভাগ্য বলেওতো একটা জিনিস আছে।কার্তিক দার ভাগ্য ভালো তাছাড়া পাটির 
নেতাদের ফর্মাশ খেটে… সেটা অবশ্য আলাদা বিষয়.." 
অনেকটা টাইম কেটে গেল ।তিনজনেই বাড়ী ফিরছে।বেশ উদাস লাগছে,এইসব হাসি ঠাট্টা 
আড্ডা ছেড়ে কিছুতেই বাইরের রাজ্যে যেতে মন চায় না রূপকের। 

তবু যেতে হবে জীবনের খোঁজে বন্ধুত্ব কখনও চিরস্থায়ী হয় না।একদিন ছেড়ে যেতেই হয়।
কিন্তু এই ছোট শহরটা? এখনও গ্রামের অস্তিত্ব মুছে যায় নি যেখানে , 
আধা মফস্বল, কত সহজে কত কম সময়ে বদলে যাচ্ছে। আর সেখানে তিনজন 
কর্মহীন বন্ধু এক অনিশ্চিত জীবনের উদ্যেশে..

[কি হতে চলেছে তাদের তিনজনের  জীবনে জানতে চোখ 
রাখুন এই উপন্যাসের পরবর্তী পর্বে ] 



               ************** 

ConversionConversion EmoticonEmoticon

:)
:(
=(
^_^
:D
=D
=)D
|o|
@@,
;)
:-bd
:-d
:p
:ng

এই ব্লগটি সন্ধান করুন