somiran sarkarer uponyas vul station a neme

 
somiran_sarkarer_uponyas_vul_station_a_neme

ভুল স্টেশনে নেমে 

সমীরন সরকার

             (৪৬ পর্ব)


-------- ওই ব্যাপারটা আমার উপরে ছেড়ে দাও ।আমি যেমন করে হোক ম্যানেজ করে বেরোব।কিন্তু কোন কারণেই তোমাকে একা ছাড়তে পারবো না।
------ কিভাবে বেরোবি ভেবেছিস কিছু?
------ এই আশ্রমের মূল মালিক স্বামী সর্বানন্দ আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় বিশ্বাসী। উনি নিজে কিছু গাছ গাছড়া ইত্যাদির ব্যবহার জানেন। তাছাড়া আশ্রমের লোকজনের চিকিৎসার জন্য উনি এই আশ্রমে একজন প্রৌঢ় এবং অভিজ্ঞ কবিরাজকে মাস মাইনে দিয়ে রেখেছেন। কবিরাজের নাম কৃষ্ণদাস মন্ডল। এই কৃষ্ণদাস কবিরাজ কে স্বামী সর্বানন্দ এবং তার ভাই স্বামী কৃষ্ণানন্দ উভয়ে অত্যন্ত বিশ্বাস করেন। এই কৃষ্ণদাস কবিরাজ মশাইয়ের বাড়ি কুমারপুর গ্রামে।
------- অর্থাৎ তোর মামার বাড়ির গ্রামে । vul station a neme [ পুর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন ]
------ হ্যাঁ। কৃষ্ণদাস মন্ডলের ছেলে সুশান্ত মন্ডল  বিশু মামার অন্তরঙ্গ বন্ধু। সেই সূত্রে কৃষ্ণদাস কবিরাজের বাড়িতে বিশু মামার নিয়মিত যাতায়াত আছে। বলতে পারো উভয় পরিবারের মধ্যে খুব অন্তরঙ্গ সম্পর্ক আছে। কৃষ্ণদাস কবিরাজ বিশু মামাকে খুব ভালোবাসেন। বিশু মামা ও মামিমার এখানে আসা ও সমস্যায় জড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটা উনি মোটেই মন থেকে মানতে পারেননি। কিন্তু যেহেতু উনি এই আশ্রমে চাকরি করেন তাই কিছু বলতে পারেননি।
-------- কিন্তু উনি তোকে কিভাবে সাহায্য করবেন?
--------- আমি শরীর খারাপের অজুহাতে ওনার কাছে যাবো তারপর সব খুলে বলে ওনার সাহায্য চাইবো। উনি আমার শরীর খারাপের ব্যাপারটা সবাইকে জানাবেন এবং আমাকে আমার ঘরে বিশ্রাম নিতে বলবেন। কাজেই অসুস্থ অবস্থায় আমার খোঁজ কেউ করবে না।       vul station a neme [ পুর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন ]
আমি দিনের বেলায় ঘর থেকে বেরোবো না ।সবাই জানবে যে, অসুস্থ বলে আমি আমার ঘরে শুয়ে আছি। রাত্রিবেলায় তোমার সঙ্গে বেরোবো অভিযানে।
---------- বুঝলাম ।কিন্তু একটা কথা মনে রাখিস

----------কী?
-------------- আমাদের কাছে তো কোনো অস্ত্র নেই বাইরে কোনো বিপদের মুখোমুখি হলে লড়বো কিভাবে?
--------- কে বলল যে আমাদের কোন‌ অস্ত্র নেই?
-------- আমার কাঁধের ব্যাগে তো একটা ছোট্ট
 পেন্সিল কাটার ছুরি ছাড়া কিছু নেই।
------- এছাড়াও একটা দামী অস্ত্র আছে আমাদের কাছে।
------- কী বলতো? vul station a neme [ পুর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন ]
--------- তোমার মনে নেই  কালভৈরব আশ্রমের লোকেদের কাছ থেকে একটা পিস্তল  কেড়ে নিয়েছিলাম? ওটা তো আমার কাছে আছে। প্রয়োজনে রান্নাঘর থেকে জোগাড় করবো আরেকটা মারাত্মক অস্ত্র?
-------কী?
--------- ওই একটা অস্ত্রে অনেক কে কাবু করা যায়।
-------------সেটা আবার কী অস্ত্র?
-------------- শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো!
------------সেকি?
---------------হ্যাঁ,ওটা মেয়েদের একটা বড় অস্ত্র।
----------বেশ, তুই তাহলে কবিরাজ দেখিয়ে যা করার করে ফেল।আজ রাতেই কিন্তু শুরু হবে আমাদের অভিযান।

                      (সাত)
গভীর রাত । পলাশ ও নন্দিনী দুজনে দুটো কালো চাদরে ভালো করে মাথা ও মুখ ঢেকে বেরিয়ে পড়ে ঘর থেকে। নিচের তলার  বারান্দায়  জোরালো আলো জ্বলছে ।এধার-ওধার তাকিয়ে কোথাও কেউ নেই দেখে নেমে গেল নন্দিনী। নিচে নেমে হাতের ইশারায় ডাকে পলাশকে।  খুব সন্তর্পনে নিচে নেমে যায় পলাশ। একসময় মেন গেটের সামনে পৌঁছে যায় ওরা ।পলাশ ফিসফিস করে বলে ,যন্ত্রটা আমাকে দে। আমি গেট খুলবো ।
নন্দিনী চাপা স্বরে বলে, তুমি পারবে কি?
------ আমাকে দে ওটা।তুই শুধু দেখে যা আমি পারি কিনা !    vul station a neme [ পুর্ববর্তী পর্ব গুলি পড়ুন ]
নন্দিনী তার জামার ভিতরে লুকানো জায়গা থেকে বিচিত্র চাবি টা তুলে দেয় পলাশের হাতে। ছোট্ট পেন্সিল ব্যাটারির মত দেখতে  চাবিটার গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে একটা জায়গা সামান্য উঁচু বোতামের মতো মনে হল। পলাশ সেই জায়গাটায় চাপ দিতেই ভেতর থেকে মোবাইলের সিম এর মত চ্যাপ্টা একটা ধাতব পাত বেরিয়ে এলো ।
পলাশ এবার ওই ধাতব  পাতের গায়ে হাত বোলাতে বোলাতে এক জায়গায় সামান্য নিচু গর্তের মত জায়গা হাতের স্পর্শে অনুভব করতে পারল ।আর কী আশ্চর্য !ওই গর্ত মত জায়গাটায়আঙ্গুল বসিয়ে চাপ দিতেই ডানদিকের পাল্লায় একটি গর্ত সৃষ্টি হল । পলাশ এবার অদ্ভুত চাবিটা ওই গর্তে ঢুকিয়ে একটু চাপ দিতেই তীক্ষ্ণ আওয়াজ করে ধাতব দরজাটা দুই ভাগ হয়ে গেল। পলাশের ঠোঁটের কোণে হাসি আর নন্দিনী চোখে বিস্ময়।



(চলবে)
                     
Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন