bengali uponyas somiran sarkar vul station a neme 33th episode

 
bengali_uponyas_somiran_sarkar_vul_station_a_neme_33th_episode



ভুল স্টেশনে নেমে 

সমীরণ সরকার

 33 তম কিস্তি 

---------------------------------------------------
নন্দিনী চুপ করে আছে দেখে পলাশ আবার তাগাদা মারে ,আরে, কি হলো, বলবি বলে চুপ করে আছিস কেন?
----- ভাবছি কোনখান থেকে শুরু করব ?
-----মানে?
----- এখানে আমি ,আমার মা ,আমার বিশু মামা, আমরা সবাই খুব বিপদের মধ্যে আছি ।আর সেই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে তোমার সাহায্য চাই পলাশদা।
------কিরকম?
----বলছি।      এই আশ্রমের মধ্যেই মাকে আর বিশু মামা কে কোথাও লুকিয়ে রাখা হয়েছে ।কিন্তু কোথায় কোন ঘরে রাখা হয়েছে, সেটা আমি জানি না ।তবে আমাকে একটা কাজের দায়িত্ব দেওয়া আছে।সেটা পালন করলে মা ও বিশুমামার কোন ক্ষতি করা হবেনা বলে আশ্বাস দিয়েছে।
------কে আশ্বাস দিয়েছে?
-------আশ্রম মাতা।
-------কে তিনি?
-------আমার মামীমা।
-------- মানে, তোর বিশু মামার স্ত্রী?
-------হ্যাঁ।
-------  তোর কি কাজ?
----- এখানে নতুন নতুন লোক  ধরে এনে 'হাওয়া মহল' এ পাঠানো ।'হাওয়া মহল'এ  অবশ্য আমাকে পাঠাতে হয় না। আশ্রম চত্বর পর্যন্ত লোক ধরে আনতে পারলেই আমার কাজ শেষ। তারপর ওরা তাকে ধরে নিয়ে যায় 'হাওয়া মহলে'।
------- 'হাওয়া মহল' কি? ওখানে তুই আমাকে যেতে দিতে চাস না কেন ?
-------'হাওয়া মহল 'এ আমি কোনদিন যাইনি ।তবে শুনেছি, ওখানে ধরে নিয়ে আসা লোকগুলো কে বন্দী করে রাখা হয় ।ঠিক মতন খাবার-দাবার দেওয়া হলেও ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হয়না। আর মাঝে মাঝেই ওদের ধরে নিয়ে কোন একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর যখন ফিরে আসে লোকটা, তখন তাকে খুব দুর্বল দেখায়। ঠিক মত চলাফেরা করতে পারে না সে বেশ কিছুদিন। বেশ কিছুদিন আটকে রাখার পর আবার তাকে অজ্ঞাত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। এটা কোথায় বা সেখানে লোক গুলোকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় কেন  , সেসব অনেক চেষ্টা করেও জানতে পারিনি ।
----- 'হাওয়া মহলে' কি শুধু পুরুষদের আটকে রাখা হয় ?   
----না ,মেয়েরাও আছে। এখানে একদল লোককে রাখা হয়েছে ,যারা মেয়েদের ভুলিয়ে ভালিয়ে নানারকম প্রলোভন দিয়ে আশ্রম এ নিয়ে আসে। তারপর তাদের বন্দি করা হয় 'হাওয়া মহল 'এ।
পুরুষদের  ধরে আনার জন্য   আমি ছাড়াও আরও  চারটি মেয়ে আছে ।
------- সবাই বোধ হয় খুব সুন্দরী।
------ হ্যাঁ ।কিন্তু তুমি কি করে জানলে ?
------ অনুমান করলাম।বাদ দে ও কথা।বল তারপরে।
----- এই আশ্রমের সামনের দিকে যে রাধামাধব মন্দির আছে, সেটার মালিক স্বামী সর্বানন্দ ।ওই মন্দিরে নিয়মিত পুজো হয়।বছরের বিভিন্ন সময় উৎসব হয় ।আশেপাশের গ্রামের লোক জনেরা সেখানে নিয়মিত আসে ।বছরের বিভিন্ন সময়ে যখন বিশেষ উৎসব হয় মন্দিরে, তখন দূর দূর এলাকা থেকে স্বামী সর্বানন্দের শিষ্যেরা উৎসবে যোগদান করেন। তাদের থাকার জন্যই মন্দির চত্বরে অনেক গেস্ট হাউস আছে।
---- হ্যাঁ, এখানে আসার সময় দেখতে পেয়েছি মন্দিরের চারিধারে অনেকগুলো বড় বড় বিল্ডিং আছে।
-----হ্যাঁ ,ওগুলোই গেস্ট হাউস। ওগুলোর ভেতর টা অত্যাধুনিক।
 স্বামী সর্বানন্দ , যার আসল নাম শুভ্র কমল রায়,তিনি বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত ।আসলে শুভ্র কমল ছোট থেকে মামাবাড়িতে বড় হয়েছে ।ণণওর মামা বাড়ির সবাই বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী ।সর্বানন্দ বৈষ্ণব মতাবলম্বী হলেও তার ভাই কৃষ্ণানন্দ অর্থাৎ কৃষ্ণ কমল রায় কিন্তু তন্ত্রসাধক ।এখানে আসার সময় নিচে যে বুড়ির কাছ থেকে চাবি নিয়ে এলাম, ওকে লক্ষ্য করে দেখেছো ?
----হ্যাঁ ,দেখেছি ।
-----ওই মহিলা বাঙালি নয়, নেপালি ।
-----হ্যাঁ, চেহারা দেখে তাই মনে হচ্ছিল ।
----- কৃষ্ণকমল এর  জন্মের কিছুদিন পরেই ওর মা মারা যায়। তখন একজন নেপালি দারোয়ান কাজ করত কৃষ্ণকমল এর বাবার কাছে। ওই নেপালি দারোয়ানের একটা তরুণী বোন ছিল ।সে তখন কোলে পিঠে মানুষ করে কৃষ্ণকমল কে। তাই আজও কৃষ্ণানন্দ এই বুড়ির কথা মেনে চলে।যৌবনে এই বৃদ্ধা খুব সুন্দরী ছিল ।শোনা যায় শুভ্র কোমল ও কৃষ্ণকমলের বাবার সঙ্গে তার নাকি একটা  অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল।

(চলবে)

Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন