uponyas vul station a neme 24th episode

 

uponyas_vul_station_a_neme_24th_episode

ধারাবাহিক উপন্যাস ২৪ তম কিস্তি

ভুল স্টেশনে নেমে

সমীরণ সরকার

যে লোকটা পলাশের মাথায় আঘাত করেছিল সে এবার চিৎকার করে ওঠে নন্দিনীর উদ্দেশ্যে বলে, ভালো কথা বলছি ,আমার পিস্তলটা ফেরত দিয়ে দে এখুনি।তা না হলে ......

------ তা না হলে কি করবে?
------সেটা দেখতেই পাবি।
----- তোমরা কে বলতো?  
----- তোর আপনার লোক নই। ওরা স্টেশনেই পড়ে আছে।
---- মানে?
------ আমাদের সাথে পাঙ্গা নিতে এসেছিল ,তাই একটু কড়কে দিয়েছি!
----- মুখোশ টা খুলে ফেলো, আমি দেখতে চাই কে তোমরা।
----- যদি না খুলি তো কি করবি?
----- গুলি চালিয়ে দেব।
----- মানে?
-------- আমি তিন গুনবো। তার মধ্যে যদি   মুখোশটা না খোলো তো আমি সত্যি সত্যি গুলি চালিয়ে দেব।
কথা শেষ করেই নন্দিনী পিস্তলটা লোকটার দিকে তাক করে গুনতে শুরু করে----এক......
------- কি করছিস কি? ওতে গুলি ভরা আছে।
------জানিতো। কথা না বাড়িয়ে মুখোশটা খোলো শিগগিরি।...দুই.......
তিন গোণার আগেই লোকটা মুখোশ খুলে ফেলে একটানে। নন্দিনী বিস্মিত হয়।  এতো তাদের আশ্রমের লোক নয়। তাহলে ওরা গেল কোথায়?
ওই লোকটা যে বলল ,ওদের কড়কে দিয়েছে।তবে কী এরা কিছু করেছে ওদের? কিন্তু এরা  কে? এরা কি 'কালভৈরব' আশ্রমের লোক?
 নন্দিনী এবার অদূরে দাঁড় করানো মোটরবাইক দুটোর দিকে তাকায়। একটা মোটরবাইক ও তো তার চেনা নয়। সে তো এতোক্ষণ খেয়ালই করেনি ব্যাপারটা ।
ওদের একজন এখনো নাকে হাত চেপে বসে আছে । কিন্তু বাকি তিনজন যদি ওকে আক্রমণ করে তাহলে তো সমস্যা হবে। সে একা ওদের সঙ্গে লড়বে কী করে? পলাশদা তো মাটিতে পড়ে আছে। সম্ভবত জ্ঞান হারিয়েছে। ওর চেতনা ফেরাতে হবে। এখন এই লোকগুলোর হাত থেকে রেহাই পেতে গেলে তাকে কিছু একটা করতে হবে। 
নন্দিনীর মুহূর্তের অন্যমনস্কতা সুযোগ নিয়ে লোকটা তার দিকে এগিয়ে আসছিল। নন্দিনী খেয়াল করতেই লোকটার মাথা লক্ষ্য করে পিস্তলটা ধরে গর্জে উঠল, কোন চালাকি করার চেষ্টা করোনা। যাও, তোমরা এক্ষুনি এখান থেকে চলে যাও।
--------- না গেলে কি করবি তুই?
------ গুলি চালিয়ে দেব।
কথা শেষ করেই   শূন্যে এক     রাউন্ড গুলি চালায় নন্দিনী। 
যে লোকটা নাকে হাত দিয়ে বসে পড়েছিল, সে এবারে উঠে দাঁড়ায়। দ্বিতীয় লোকটির উদ্দেশ্যে কি যেন বলে সে। ওরা দুজনেই দ্রুত পায়ে এগোতে থাকে মোটরবাইকের দিকে। নন্দিনী ওদের দিকে পিস্তল তাক করে থাকে। ওরা দুজনে দুটো মোটর বাইকের পিছনে বসতেই মোটর বাইক দুটো স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়।
নন্দিনী পলাশের ব্যাগ থেকে থেকে জলের বোতল বের  করে । পলাশের মুখে চোখে একটু ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতেই ওর জ্ঞান ফেরে।
 ও উঠে বসে। নন্দিনী ব্যাকুল কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করে, কেমন লাগছে এখন পলাশদা?
-----ভালো।শুধু ঘাড়ের কাছে একটু যন্ত্রণা হচ্ছে।
কিন্তু তোর হাতে পিস্তল কেন? পেলি কোথায় ?
 ------- ওদের পিস্তল, কেড়ে নিয়েছি।
----- সেকিরে!
------- হ্যাঁ। ওটা দিয়ে ভয় দেখাতেই তো ওরা পালিয়ে গেল।
-----মানে?
------ বাদ দাও ওসব কথা। তুমি হাঁটতে পারবে তো?
----- পারবো ,কিন্তু কদ্দুর  যেতে হবে?
-----আমরা সর্বানন্দ আশ্রম এর কাছাকাছি চলে এসেছি। আসলে আমি বেশিক্ষণ এখানে অপেক্ষা করতে চাইছি না।  ওই গুন্ডাগুলো চলে গেছে ঠিক, তবে যেকোনো মুহূর্তে ফিরে আসতে পারে ওরা।
----বেশ চল।
উঠে দাঁড়ায় পলাশ।
পাকা রাস্তা ধরে সামনের দিকে এগোতে থাকে নন্দিনী। ওকে অনুসরণ করে পলাশ। মিনিট দশেক হাঁটার পরে পলাশ দেখতে পায় বেশ কিছুটা দূরে একটা মন্দিরের ধবধবে সাদা চূড়া দেখা যাচ্ছে। পলাশ নন্দিনীকে কে জিজ্ঞাসা করে, দূরে একটা মন্দিরের চূড়া দেখা যাচ্ছে, ওটা কি মন্দির?
------ ওটাইতো সর্বানন্দ আশ্রম। যে মন্দিরের চূড়া দেখতে পাচ্ছ, ওটা রাধামাধব মন্দির।
ওখানে পৌঁছালেই আমরা নিশ্চিন্ত।

(চলবে)

Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন