dharabahik uponyas vul station a neme 23th episode kolome samiran sarkar



dharabahik_uponyas_vul_station_a_neme_23th_episode_kolome_samiran_sarkar

                                 ধারাবাহিক উপন্যাস ২৩তম কিস্তি

ভুল স্টেশনে নেমে 

সমীরণ সরকার

ওদের দেখে চমকে ওঠে পলাশ । নন্দিনী তো তাহলে ঠিকই বলেছিল । গুন্ডা গুলো সেই স্টেশন থেকেই তো তাহলে ওদের ফলো করছিল । নন্দিনী ওকে নিয়ে  এত কষ্ট করে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এসেও ওই গুন্ডা গুলোর হাত থেকে রেহাই পেল না। শয়তানগুলো ঠিক ধরে ফেলল ওদের । ওরা কি এখন নন্দিনীকে নিয়ে যাবে  জোর করে? না ,তা কিছুতেই হতে পারে না। বহু বছর আগে একবার হারিয়ে ফেলেছিল নন্দিনীকে। আজ এত বছর পরে ওকে ফিরে পেয়ে আবার হারাতে পারবে না। কিন্তু সত্যি কি সে নন্দিনীকে ফিরে পেয়েছে? সে ভুল স্টেশনে নেমেছিল বলে আর নন্দিনী পালিয়ে এসেছিল বলেই না দেখা হলো তাদের।

সে যাই হোক, নন্দিনী যখন তার সাহায্য চেয়েছে, সর্বশক্তি দিয়ে সে সাহায্য করবে নন্দিনীকে।
                 মোটরববাইক দুটোতেই চালক ছাড়া আরও একজন করে আরোহী আছে। চারজনের প্রত্যেকের মুখ মুখোশে ঢাকা। ওদের প্রত্যেকের পরনে নেভি ব্লু কালারের জিন্সের প্যান্ট আর গায়ে মিলিটারিদের মত ছাপ ছাপ জলপাই রঙের ফুলহাতা জামা।   মোটরবাইক দুটো নন্দিনী আর পলাশ কে কেন্দ্র করে চক্রাকারে ঘুরছিল। নন্দিনী চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। যেন এমন কিছু হয়নি। এটা যেন প্রত্যাশিত ছিল ।
পলাশ খুব বিরক্ত হয়, উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মনে মনে। এক সময় সে ধৈর্য হারিয়ে একটা মোটর বাইকের পেছনটা টেনে ধরে। বাইকটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লটপট করে  পড়তে পড়তে কোনরকমে দাঁড়িয়ে যায়। একটু দূরে দাঁড়িয়ে যায় দ্বিতীয় মোটরবাইক টাও। দুটো বাইকের পিছনে বসে থাকা লোক দুটো প্রায় ঝাঁপিয়ে  নামে। মুখোশে ওদের মুখ ঢাকা আছে বলে বয়স বোঝার উপায় নেই।  তবে মোটর বাইক থেকে যেভাবে ঝাঁপিয়ে নামল ওরা, তাতে ওদের যুবক বলেই মনে হয়।
           ওরা দুজনেই পলাশের কাছে আসে। ওদের মধ্যে একজন পলাশের গায়ে ঈষৎ ধাক্কা মেরে বলে, কি ব্যাপার রে,তুই আমাদের বাইক আটকালি কেন?
পলাশ মনে মনে খুব রেগে গেলেও ঠাণ্ডা মাথায় জবাব দেয়, তোমরা আমাদের চারদিকে বাইক নিয়ে  ওভাবে  ঘুরছিলে কেন…?
----খাতির করছিলাম!
---মানে?
---- কি ভেবেছিলি ,আমাদের হাত থেকে পালিয়ে বেঁচে যাবি তোরা ?
------- তোমরা একটা মেয়েকে এভাবে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে দিতে পারো না।
------ বিয়ে! কার বিয়ের কথা বলছিস?
----- কেন ,ওই মেয়েটার বিয়ে দেবে বলেই না ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছ তোমরা।
নন্দিনীকে দেখিয়ে কথাটা বলে পলাশ। পলাশের কথা শেষ হতে না হতেই ওরা দুজনে  হেসে ওঠে সশব্দে। পলাশ বিস্মিত হয়। নন্দিনী এগিয়ে এসে পলাশের উদ্দেশ্যে বলে, চলো পলাশদা, আমরা আশ্রমের দিকে যাই।
মুখোশ পরা লোক দুটোর মধ্যে একজন নন্দিনীর হাত ধরে টেনে বলে, ওসব আশ্রম টাশ্রম পরে যাবে সুন্দরী, এখন আমাদের সঙ্গে চলো।
পলাশ গর্জে ওঠে, ওর হাত এক্ষুনি ছেড়ে দাও বলছি!
যে লোকটি নন্দিনির হাত ধরে ছিল, সে পাল্টা চিৎকার করে, না ছাড়লে কি করবি তুই?
----- উচিত শিক্ষা দেব।
নন্দিনী চিৎকার করে ওঠে, "পলাশদা ,ছেড়ে দাও, ওদের সঙ্গে লাগতে যেওনা। "
পলাশ নন্দিনীর কথায় কর্ণপাত না করে আবারো চিৎকার করে ওঠে, কি হলো, হাত ছেড়ে দিতে বললাম তো।
------ ছাড়বো না, এই দ্যাখ!
কথা শেষ করেই লোকটা নন্দিনীর হাত ধরে  হ্যাঁচকা টান মারে।  নন্দিনী গিয়ে  প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে লোকটার বুকে।
আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পলাশ লোকটার নাক লক্ষ্য করে একটা ঘুসি মারে সজোরে। লোকটার নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়তে শুরু করে।ও নন্দিনীকে ছেড়ে দিয়ে নাকে হাত দিয়ে বসে পড়ে মাটিতে। দ্বিতীয় লোকটি  আচম্বিতে  পকেট থেকে একটা ভারী পিস্তল বের করে সজোরে আঘাত করে পলাশের মাথায়। পলাশ পড়ে যায় মাটিতে।
নন্দিনী প্রায় ঝাঁপিয়ে লোকটার হাত থেকে পিস্তলটা কেড়ে নেয়।তারপর পিস্তলের ট্রিগারে হাত রেখে  লোকটির মাথা লক্ষ্য করে বলে, তোমরা এক্ষুনি চলে যাও এখান থেকে, নইলে আমি গুলি চালিয়ে দেব!

(চলবে)

Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন