vul station a neme kolome samiran sarkar

vul_station_a_neme_kolome_samiran_sarkar

ভুল স্টেশনে নেমে

১৭ শ কিস্তি 

সমীরণ সরকার 

 ঘটনার আকস্মিকতায় ঘাবড়ে গিয়ে পলাশ কোনমতে বলে, কোথায় যাব আমরা?

নন্দিনী ফিসফিস করে বলে, জানিনা কোথায় যাব,তবে পালাতে যে হবে এটা ঠিক। যে লোক গুলো আসছে, ওরা ভয়ংকর। আর কথা না বলে চলো আমার সঙ্গে।
------- কিন্তু আমার ইন্টারভিউ....
------ আগে প্রাণ তো বা্ঁচুক, তারপরে তো ইন্টারভিউ!
----- কিন্তু
------ আর কথা বলোনা পলাশদা। বেশি দেরি করলে তোমাকে ওদের হাত থেকে বাঁচাতে পারবো না,  আমিও বাঁচব না।
পলাশ দেখতে পায় যে, জোরালো টর্চ হাতে কয়েকজন লোক ছুটতে ছুটতে আসছে। নিরুপায় হয়ে পলাশ বলে, চলো নন্দিনী, কোথায় যাবে।
 পলাশের হাত মুঠোয় পুরে ছুটতে শুরু করে নন্দিনী। লোকগুলো যেদিক থেকে আসছিল, ঠিক তার উল্টো দিকে দৌড়াচ্ছিল নন্দিনী। পলাশ প্রথমটায় খুব অবাক হয়ে যাচ্ছিল এটা দেখে যে, এই অন্ধকারে নন্দিনী ছুটছে কি করে।
ও কি অন্ধকারে দেখতে পায়? কিন্তু কিভাবে?
এভাবে কিছুক্ষণ দৌড়াতে দৌড়াতে ধীরে ধীরে
 অন্ধকারটা চোখে সয়ে যাচ্ছিল পলাশের। সে বুঝতে পারছিল নন্দিনী স্টেশন চত্বর পেরিয়ে একটা মাঠে নেমেছে। ফাঁকা মাঠ ,কিন্তু উঁচু-নিচু, এবড়ো খেবড়ো। ছুটতে ছুটতে মাঝে মাঝেই হোঁচট খাচ্ছিল পলাশ। তাকে পতনের হাত থেকে বাঁচাচ্ছিল নন্দিনী। বেশ কিছুক্ষন এভাবে চলার পর নন্দিনী থামল। পলাশ হাঁপাচ্ছে। এভাবে ছোটার অভ্যাস নাই তার। কিন্তু নন্দিনীর যে কোন রকম অসুবিধা হচ্ছে তা আদৌ মনে হলো না পলাশের। নন্দিনী বেশ স্বাভাবিক গলায় বলল, এবারে কি করা যায় পলাশদা?
---- মানে?
----- এখান থেকে যাওয়ার মানে পালাবার দুটো রাস্তা আছে। প্রথমটা পাকা রাস্তা ধরে আর দ্বিতীয়টা জঙ্গলের পথ ধরে।
---- সেটাতো বুঝলাম, কিন্তু কোথায় যাব আমরা?
------- মহেশপুরে।
---- সেটা কোথায়?
---- আমার মামাবাড়ী কুমারপুর গ্রামের পাশের গ্রাম।
------ সেখানে কেন?
---- স্বামী সর্বানন্দের আশ্রমে যাব আমরা। আপাতত কিছুদিন  ওখানে লুকিয়ে থাকতে হবে আমাদের। এই গুন্ডাগুলো কোনমতেই সেখানে প্রবেশ করার সাহস পাবে না।
----- কিন্তু আমার ইন্টারভিউ এর কি হবে?
------ ওই গুন্ডা গুলো কিন্তু এত সহজে আমাদের ছেড়ে দেবে না পলাশদা। স্টেশন থেকে বেরিয়ে মোটর বাইক নিয়ে খুঁজতে খুঁজতে এদিকে যেকোনো মুহূর্তে চলে আসতে পারে ওরা।তাছাড়া......
----- তাছাড়া কি?
------ একদিন তো আমার সব দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছিলে ।
পলাশ নিরুত্তর। 
নন্দিনী আবার বলে,আজকে এই বিপদের মধ্যে আমাকে ফেলে তুমি চলে যাবে পলাশদা?
নন্দিনীর কথা শেষ হতে না হতেই মোটর বাইকের আওয়াজ ভেসে আসে।

(চলবে)
Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন