স্বস্তিকের বিশ্বাস
তনিমা সাহা
বল্লভপুরে আজ বিরাট আয়োজন। এখানকার শতাধিক পুরোনো বিষ্ণুমন্দিরে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে পূজোনুষ্ঠান হয়। তখন মেলাও বসে। দূর দূর থেকে দর্শনার্থীদের ভীড় হয় এই জাগ্রত বিষ্ণুমন্দিরে। বল্লভপুর থেকে কিছুদূরেই 'পল্লর' নামে একটি শহরতলী রয়েছে যেখানে দুই ভাই প্রদীপ লস্কর ও প্রণয় লস্কর একসাথে মিলে 'লস্কর ফার্ম এন্ড ডেইরি প্রোডাক্টস' নামে একটি পোলট্রি ফার্ম চালায়। যৌথ ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও দুই ভাইয়ের মধ্যে হৃদ্যতা কিন্তু কোনো অংশে কম নেই। বড়োভাই প্রদীপ স্ত্রী
পারুলকে তাড়া লাগালেন, "কই গো হলো। স্বস্তিক তারাতারি কর বাবা"। স্বস্তিক তৈরী হয়ে এসে বলল, "বাবা আমি না গেলে নয়। কালকে আমার একটা ইম্পরট্যান্ট স্পোর্টস আছে"। এমন সময় পারুল ঢুকে বললেন, "সকাল থেকেই এই গান গেয়ে যাচ্ছে। খালি যাব না ,যাব না"। প্রদীপ বাবু বললেন, "ঠাকুর বাড়ি যেতে কখনো মানা করতে নেই সোনা। তাছাড়া বল্লভপুরের বিষ্ণুমন্দির খুব জাগ্রত রে। আজ আবার জন্মাষ্টমীর পুজো, খুবই পবিত্র দিন। দেখবি কালকের স্পোর্টসে তুই জিতবি"। ওরা বেরিয়ে গেলে ছোটভাই প্রণয়ের স্ত্রী নবীনা এসে দরজা দেওয়ার আগে বললেন, "সাবধানে যেও সবাই। আর ওই টোটোওলা পিক্কুকে বলবে আস্তে আস্তে চালাতে। কাল বেশ বৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা খারাপ থাকতে পারে"। "হ্যাঁ, হ্যাঁ আমরা ঠিক ভাবে যাব। তুই গিয়ে শুয়ে পড়। সকালে কতটা বমি করলি। প্রণয় মার্কেট থেকে ফিরলে একবার ডঃ বসাকের কাছে যাস, কেমন। আসি আমরা….", বললেন পারুল। নবীনা মাথা নেড়ে দরজা বন্ধ করে এসে শুয়ে পড়লো বিছানায়। শরীরটা সত্যিই আজ ভালো নেই তার।
কতক্ষন ঘুমিয়ে ছিল খেয়াল নেই নবীনার। যখন পাশে রাখা মোবাইল ফোনটা সজোরে বেজে উঠলো তখন থতমত খেয়ে লাফিয়ে উঠে বসলো। ফোনটা ততক্ষণে বেজে বেজে বন্ধ হয়ে গেছে। আবার ফোনটা বেজে উঠলে ঝট্ করে ফোনটা কানে দিয়ে 'হ্যালো' বলতেই ওপাশে প্রণয়ের গলা শুনতে পেল, "কী গো কোথায় ছিলে? কখন থেকে ফোন করে যাচ্ছি। শোনো দাদা-বৌদিদের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। আমি হাসপাতালে এসেছি ওদের নিয়ে"। "ওরা ঠিক আছে তো? কী করে হলো….., কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলো নবীনা। "কাল বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা খারাপ ছিল, পিক্কু কী করে চালাচ্ছিল কে জানে, হঠাৎ কোনো একটা গর্তে টোটোর চাকা আটকে পুরো টোটোটাই উল্টে গেল। বাকীদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি, কিন্তু……"। "স্বস্তিক…..স্বস্তিক ঠিক আছে তো", ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল নবীনা। প্রণয় সেকথা শোনার আগেই ফোন কেটে দিল। নবীনা উঠে ঠাকুর ঘরে গিয়ে হাতজোর করে একমনে প্রার্থনা করতে লাগলো, "ঠাকুর ছেলেটার যেন কিছু না হয়। কালকে ওর খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। ঠাকুর তুমি দেখো, ওরা সবাই যেন ভালো ভাবে ঘরে ফিরে আসে"। কতক্ষন ওইভাবে বসে ছিল তা জানেনা নবীনা। সম্বিৎ ফিরলো কলিংবেলের শব্দে।
দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খুলতেই প্রণয়ের কাঁধে ভর দিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে প্রদীপ ঢুকলেন। পেছন পেছন মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে হুইল চেয়ারে স্বস্তিককে নিয়ে ঢুকলেন পারুল। স্বস্তিককে হুইল চেয়ারে দেখেই আঁতকে উঠলো নবীনা। প্রণয় তাকে আস্বস্ত করে বলে, "ঘাবড়ানোর মতো কিছু হয়নি নবীনা। স্বস্তিক বাবুর পায়ের হাড়ে একটা ফাটলের মতো পড়েছে। ডক্টরবাবু বলেছেন যে মাসখানেকের মধ্যেই আমাদের দৌড়বীর আবার আগের মতোই ট্র্যাক কাঁপাবে"। একমুখ মেঘ করে স্বস্তিক বললো, "না কাকুমনি, আগের মতো আর কিছুই হবে না। বারবার বলেছিলাম আমি যাব না,আমি যাব না। কিন্তু তোমরা কেউ শোনোনি। তোমাদের ঠাকুর পুজোটাই বড়ো ছিল। আমার স্বপ্নটা নয়", বলে নবীনার দিকে তাকিয়ে বললো, "কাকিমা আমায় একটু ঘরে পৌঁছে দাও"। নবীনা হুইল চেয়ারটা ঠেলে ঠেলে স্বস্তিককে নিয়ে গেল ভেতরে। পারুলের চোখ থেকে নিঃশব্দে অশ্রুবারি ঝরতে লাগলো। প্রণয় প্রদীপকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিল। প্রদীপ বললেন, "আমরা হলাম গিয়ে গোয়ালা। আমাদের নন্দগোপালের আরাধনা না করলে কী চলে। ছেলেটাকে সেকথাটাই বোঝাতে পারছি না"। প্রণয় বললেন, "দাদা, তুমি এতো চিন্তা করোনা। এখন উঠতি বয়েস, এখন একটু ওরকম করবে। দেখবে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে"। তারপর নবীনাকে বললো, "শুনছো, তুমি একটু খাবারের ব্যবস্থা করো। দাদাদের এখন ওষুধ খাওয়ার আছে"। নবীনা রান্না করেই রেখেছিল। প্রদীপ,প্রণয় আর পারুলকে খাবার দিয়ে স্বস্তিকের খাবার বেড়ে তার ঘরে নিয়ে গেল নবীনা। স্বস্তিকের ঘরে গিয়ে নবীনা দেখে সে সেইথেকে বিছানায় শুয়েই আছে। নবীনা গিয়ে ডাকলেও স্বস্তিক কোনো জবাব দিল না। খাবারের থালাটি টেবিলের ওপর রেখে নবীনা বিছানায় বসে স্বস্তিককে আবার ডাকলো, "বাবু,ওঠ বাবা। একটু কিছু খেয়ে ওষুধটা খেয়ে নে"। স্বস্তিক বললো, "না, কাকিমা, আমার খিদে নেই। আমি কিছু খাবো না"। নবীনা বললো, "অমন করে সোনা। তুই না এবার মাধ্যমিকে স্টার পেয়েছিস। তাছাড়া আমাদের এই 'পল্লর' শহরতলীর সেরা দৌড়বীরের মুখে এমন নেতিবাচক কথা মানায় না। আমি চটপট করে একটু ভাত মেখে খাইয়ে দিচ্ছি"। খুব ধীরে ধীরে স্বস্তিক বললো, "চার বছর ধরে কী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি আমি …… শুধু কালকের দিনটির জন্যে। কিন্তু… সব শেষ হয়ে গেল। এমন সুযোগ কী আর আসবে…"। নবীনা হালকা হেসে স্বস্তিকের হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বললেন, "জানিস তো বাবা, মূর্তিকারের হাতুড়ির আঘাতের আগে প্রস্থর প্রতীমা কিন্তু শুধুমাত্র একটি প্রস্থর খন্ড থাকে। মূর্তিকারের ক্রমাগত প্রচেষ্টায় সেই প্রস্থর খন্ড রূপ নেয়, আকার নেয়। প্রস্থরকে মূর্তিতে রূপান্তরিত করতে গিয়ে মূর্তিকারেরও কিন্তু অনেক সমস্যায় পড়ে। হতে পারে তার হাত কেটে গেল, হতে পারে তার আঙ্গুল থেঁতলে গেল, হতে পারে খন্ডটি মূর্তির আকার নেওয়ার আগেই হাতুড়ির একটা ভুল ঠোকায় পুরো প্রস্থরখন্ডটাই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। কিন্তু এতসবের পরও মূর্তিকার চেষ্টা করা ছাড়ে না। সে আবার নতুন উদ্যোমে শুরু করে মূর্তি গড়ার কাজ। যদি একজন মূর্তিকার ক্রমাগত চেষ্টা করে যেতে পারে তবে তুমি কেন হাল ছেড়ে দিচ্ছ। দেখবে নন্দগোপাল আবার সুযোগ দেবেন"। স্বস্তিক আর কোনো কথা বললো না। নবীনা তাকে খাবার খাইয়ে ওষুধ খাইয়ে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে।
এরপর কেটে গেছে দুমাস। প্রদীপ, পারুল, স্বস্তিক এখন সবাই মোটামুটি সুস্থ। স্বস্তিক এখন আস্তে আস্তে হাঁটতেও পারছে। সবাই নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেলেও স্বস্তিকের মন থেকে এখনও কিছুতেই সেইদিনের দূর্ঘটনার ছবিটা মুছে যায়নি। সে হঠাৎই খুব চুপচাপ হয়ে গেছে। প্রদীপ ছেলের এই অবস্থা দেখে কোনো ডক্টারের পরামর্শ নেওয়া স্থির করলেন। কোলকাতার এক বিখ্যাত শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ পল্লরে প্রতি শনিবার আসেন।সেখানে স্বস্তিককে নিয়ে গেলে উনি সব দেখেশুনে বললেন, "স্বস্তিক বাবু তুমি একদম ঠিক আছ। পনেরো বছরের ছেলে হয়ে চৌষট্টি বছর বয়সের হয়ে কেন আছ? বাড়ির লোকেদের সাথে কথা বলো,বাড়ির বাইরে যাও,একটু ঘোরাঘুরি করো। দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে"। তারপর প্রদীপের দিকে তাকিয়ে বললেন, "প্রদীপবাবু আপনি একদম চিন্তা করবেন না। শুধু ওকে একটু সময় দিন। দেখবেন সময়ের সাথে সাথেই সব ঠিক হবে"। ডক্টারবাবুর কথায় প্রদীপ অনেকটাই আস্বস্থ হলেন।
আরো বেশ কিছু মাস ও অতিক্রান্ত হলো। স্বস্তিক এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। রোজ বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নদীর ধারে বেড়াতে আসে। এসময়টা বেশ ভালো লাগে স্বস্তিকের।নদীর ঠান্ডা বাতাস, চারদিকের নিরিবিলি পরিবেশ তার অশান্ত মনটাকে বেশ শান্তি দিল। রোজের মতো আজও বেড়িয়েছে সে নদীর ধারে বেড়াতে যাওয়ার জন্য।বেড়ানোর বাহানায় একপ্রকার পালিয়ে এলো বাড়ি থেকে। আজ আবার জন্মাষ্টমী। বাড়িতে নন্দগোপালের প্রতিমূর্তি গড়ে পূজো করা হচ্ছে। এই দিনটিকে এখন একেবারেই পছন্দ করে না স্বস্তিক। একবছর আগে এই দিনটিতেই ওর সবচেয়ে অভিপ্রেত সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। ওদের গোয়ালা পাড়ায় সবার ঘরে ঘরে পূজো হচ্ছে। 'শুধু মূর্তি পূজনই সার, ভগবান কী সত্যিই আছেন'― নদীর ধারে হাঁটতে হাঁটতে এসবই ভাবছিল স্বস্তিক। "আছেন আছেন।ভগবান সবসময়ই আমাদের আশেপাশে আছেন".....স্বস্তিক মাথা ঘুড়িয়ে এদিক ওদিক দেখতে লাগলো।জোরে চেঁচিয়ে বলল, "কে কথা বলছ"। "আহঃ! চেঁচাচ্ছ কেন? আমিতো কাছেই আছি"...কথাগুলো বলতে বলতে একটা ওরই বয়সী ছেলে খালি গায়ে খাটো করে ধুতি পড়া যার মাথায় পাতার মুকুট, হাতে ছোটো একটা বাঁশের কঞ্চি নদীর ধার দিয়ে পাড়ে উঠে এলো। "আমার নাম বংশী,তোমার নাম কী"? ভারী অবাক হলো স্বস্তিক কিন্তু একটু বিরক্তও হলো। এসময়ে কেউ তাকে বিরক্ত করুক সে চায়না। বংশী বললো, "তুমি কি কথা বলতে পারোনা"? হঠাৎ বংশী বলে উঠলো, "আরে আরে দাঁড়াও",বলে সে চট করে ঝুঁকে কী যেন ধরল। স্বস্তিক দেখলো বংশীর হাতে ধরা একটি কালো কুচকুচে বিষধর সাপ। স্বস্তিক ভয় পেয়ে দু'পা পিছিয়ে এলো। মনেমনে ভাবলো বংশী যদি দেখতে না পেত তাহলে এক্ষুনি সাপটা নির্ঘাত ছোবল দিত। বংশী বললো, "দাঁড়াও আগে একে ছেড়ে আসি,নইলে আবার কাকে ভয় পাইয়ে দেবে"। স্বস্তিক দেখলো যে বংশী যেন সাপটার সাথে কথা বলছে,যেন সেটা তার বহুদিনের বন্ধু। সাপটিকে একটি নিরাপদ দূরত্বে রেখে এসে বললো,"তোমাদের বাড়িতে আজ পুজো নেই"? খুব গম্ভীর মুখে স্বস্তিক বললো, "আছে। কিন্তু… আমার এই পুজোটা ভালো লাগে না"। "কেন"?....বংশীর প্রশ্নের জবাবে স্বস্তিক গতবছরের ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনাটির কথা বললো। শুনে বংশী বললো, "আচ্ছা এমন ও তো হতে পারতো যে তুমি ঘর থেকে বেড়োলে স্পোর্টস মিটে যোগদান করতে তখন এমন দূর্ঘটনা হলো, তখন কী করতে, কাকে দোষ দিতে। জানো তো আমাদের জীবনে যেকোন সংঘটন, ঘটনা বা দূর্ঘটনা সবই আমাদের কে ভবিষ্যতের জন্যে আরো সুঠাম, আরো সুদৃঢ় করে । নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমার আপন মামা আমাদের সব জমি দখল করে নিয়েছিল। আমি কিন্তু হাল ছাড়িনি। জমির কাগজ আদায় করেই ছেড়েছি। আজ আমাদের বাড়িতেও পূজো হচ্ছে"। স্বস্তিক বললো, "কোথায় তোমার বাড়ি"? বংশী আঙ্গুল তুলে বললো, "ও.…...ই, যে কৃষ্ণচূড়া গাছটি আছে তার ডানদিক ঘেঁসেই আমার বাড়ি"। এমন সময় কেউ একজন এসে বললো," বংশী চল,মা ডাকছে। খেতে চল.."। বংশী বললো, "যাই রাম দাদা"। তারপর স্বস্তিককে বললো, "বাড়ি যাও বন্ধু। নিজের উপর থেকে কখনো বিশ্বাস হারিও না। দেখবে জয় তোমারই হবে"। বংশী তার দাদা রামের সঙ্গে রওনা দিলে স্বস্তিকও বাড়ির দিকে রওনা দেয়। বাড়ি এসে কি মনে হতে জামাকাপড় ছেড়ে, হাত-পা ধুয়ে একবার পুজোর ঘরে গেল। প্রণাম সেরে উঠতেই নন্দগোপালের প্রতীমার দিকে চোখ যেতেই জোর চমকে উঠলো স্বস্তিক। আরে প্রতীমাটি তো হুবহু বংশীর মতোই দেখতে, সেই খাটো ধুতি, মাথায় পাতার মুকুট। বিদ্যুৎ ঝলকে তার মনে পড়ে যায় কৃষ্ণচূড়া গাছটির ডানপাশে একটি গোপাল মন্দির আছে, যদিও সে কখনো যায়নি। বংশীর চট করে কালো সাপটাকে ধরে নিয়ে তার সাথে গল্প করা….আ...র মামা… তবে কী কংস মামা আর রাম মানে কী বলরাম… তার নিজের নাম-ও যে ছিল বংশী। তবে কী….তবে কী সে সত্যিই এসেছিল…. আনমনেই স্বস্তিকের হাতদুটো জোর হয়ে বুকের কাছে চলে এলো। মনে মনে বললো সে, "তুমি এসেছিলে ঠাকুর, তুমি এসেছিলে….আমি তোমায় চিনতে পারলাম না। আমি….কী করি ..কী করলে তোমায় আবার দেখতে পাব.…."। যেন কেউ কানে কানে স্বস্তিকের বললো, "আমি আছি, আমি ছিলাম আমি সদা থাকবো তোমার পাশে স্বস্তিক। তুমি চেষ্টা করা ছেড়ো না, নিজের উপর বিশ্বাস হারিও না"....। স্বস্তিক এপাশ ওপাশ তাকিয়ে কিছু দেখতে না পেলেও বুঝতে পারলো ঈশ্বর তার সঙ্গে রয়েছেন। সেদিনের পর থেকে স্বস্তিকের ভেতর আমূল পরিবর্তন এলো। স্বস্তিক এখন আগের চাইতেও বেশী প্রশিক্ষণ করে, আগের চাইতেও অনেক বেশী দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সে। দেখতে দেখতে আবার স্পোর্টস মিট আয়োজিত হলো এবং সবাইকে তাক লাগিয়ে স্বস্তিক প্রথম সারির খেলোয়ার নির্বাচিত হলো। বাড়ির সবাই খুব খুশী। কিন্তু সবচাইতে খুশী ছিলেন পারুল। ছেলের মুখের হাসি আবার ফুটে উঠেছে,তাতেই তিনি নন্দগোপালের কাছে কৃতার্থী। স্বস্তিককে যখন জেলা প্রশাসক সর্বশ্রেষ্ঠের মেডেল পড়াচ্ছিলেন তখন ভীড়ের মধ্যে এক ঝলকের জন্য যেন বংশীকে দেখতে পেল,সেই খাটো ধুতি, মাথায় পাতার মুকুট, হাতে বাঁশের কঞ্চি। পরক্ষণেই আবার কোথায় উধাও হয়ে গেল বংশী। স্বস্তিক কিন্তু এখন জানে তাকে ক্রমাগত আরও ভালো করতে হবে আরও চেষ্টা করতে হবে। আর নিজের উপর থেকে কখনোই বিশ্বাস হারানো চলবেনা।
:- সমাপ্ত -:
ConversionConversion EmoticonEmoticon