choto golpo ar sei gondhota



 

choto_golpo_ar_sei_gondhota


 আর সেই গন্ধটা:

সঞ্জীব সেন  

কতদিন এমন হয়েছে দিপালি দি গোলাপি আর হলুদ শাড়ির সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ পড়ে সদ্য স্নান করে কোথাও যাচ্ছে ।

 আর গা থেকে উড়ে আসছে ফুলের গন্ধ আর আমায় ঘোর লাগিয়ে দিচ্ছে । একদিন বলেই ফেললাম তুমি যেমন সুন্দরী  

 তোমার লেখাগুলোও তেমন সুন্দর । দিপালি দি একটুও অহঙ্কারী না হয়ে বলেছিল কি দেখে আমাকে এত সুন্দরী মনে

  হল বলবি? এমন প্রশ্নে কী উত্তর দেওয়া যায় ।কী করেই বা ব্যাখ্যা করব জানিনা, তোমার হাঁটা চলা তোমার

  সুকোমল  হাত দিয়ে বাস থামিয়ে উঠে যাওয়া ভিজে চুল গায়ের অচেনা ফুলের গন্ধ সবকিছু আমাকে পাগল করে । তবুও

ভেবে নিয়ে বললাম কেন তোমার ঘরে আয়না নেই ! দিপালিদি অসামান্য হাসিটা ছুড়ে দিয়ে হাত দিয়ে অটো

 থামিয়ে চলে গেছিল আর সেই গন্ধটা আমায় চোরাস্রোতের ভিতর নিয়ে গেল ।


আরাকদিন সাহস করে বলেই ফেললাম

তোমার উপন্যাস গুলোয় এত যৌনতা কেন! উত্তরে বলেছিল কেন রে, মেয়েদের লিবিডো  থাকেনা, ভার্জিনিয়া উলফ

এইজন্য বলেছিল মেয়েরা চাইলেও কোনদিন সেক্সপিয়ারের মত লিখতে পারবে না। আর চলে যেতেই সেই গন্ধটা

 

আবার আমায় গভীরে নিয়ে গেল।এরকম মোচড় দেওয়া লেখা কেউ কি লেখে?আর এই লেখার সূত্র ধরেই কি জন্ম নেয় প্রেম!

দিপালি দি কে হয় আমার, পড়শি, প্রেমিকা না  , না মনের অন্তরালে এক অন্তরতম চরিত্র, যখন প্রতিরাতে নিয়ম মেনে

স্বপ্নে আসে, হুবহু উপন্যাসের মত, এসে বলে অরণ্য আমায় চুমু খাবে, সেই প্রথম আমার কোন নারীকে চুমু খাওয়া,

দিপালি দি যখন বলে ওঠে অরণ্য তুমিই আমার প্রথম অরণ্যপুরুষ, আরাকদিন যখন স্বপ্নে ভ্রমণ করি দিপালি দির স্নানঘরে

গোপন প্রেমিক হয়ে ।কেন এমন স্বপ্ন আসে বার বার ।দিপালি দি বিয়ে করল না, বয়স কি থেমে থাকে ! দিপালি দি চার

 বছরের বড় ।আমি সামান্য গেঞ্জি কারখানার অয়ার্কার ।আমার জীবনটা অন্য খাতে বইতে পারত। মাধ্যমিকে স্টান্ড

 করা স্টুডেন্ট, হ্য়ারসেকেন্ডারিতে গিয়ে সাধারণ মার্কস তারপর এক লিডারের হাতে ধরে গেঞ্জি  কারখানায় আসা ।

 আমার কী স্বপ্ন মানায় ।এই কথাগুলো মাঝেমধ্যে মাথায় ভিড় করে ওঠে । দিপালি দি হাসপাতালে ভর্তী ।ডাক্তার বন্ধুর

 সুত্রে জানতে পারি, ব্রেস্ট ক্যান্সার ।কাটা যাবে দুটো স্তন, ।স্বপ্নে আসত দিপালিদি রাতের পোশাকে বলছে অরণ্য তোমার

 চুমুর অপেক্ষায় আছি, ওর ভরাট বুকের ভিতর চুমু দিতে গেলে জড়িয়ে ধরত ।সেই স্তনদুটো কাটা যাবে ।হঠাৎ বাজ

 ডেকে উঠল সকাল থেকেই মেঘে ঢেকে ছিল ।আমার কথাটা ঢাকা পরে গেল সেই বাজের ভিতর ।দিপালি দি আমি

 তোমায় ভালবাসি, খুব ভালবাসি ।যখন চোখ খুললাম হাসপাতালের মেল ওয়র্ডে ।কতদিন এভাবে ঘুমিয়ে ছিলাম।

 উপন্যাসের প্রতিটি সংলাপ মাথায় হাতুরীর মত আঘাত করছে। মাথা ভার হয়ে আছে ।যখন চোখ খুললাম দেখি   

 চেনামুখগুলো দাঁড়িয়ে আছে , আবার মাথাটা ভার হয়ে আসছে । , অনেক কষ্টে চোখ খুলে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করছি,

 আবার হাতুরীর শব্দ ।করাত-কাটার শব্দ । চোখ বন্ধ হয়ে এল আর দেখতে পাচ্ছি দিপালি দি এগিয়ে আসল ।বলল

 উঠিস না, কাছে আসল আমি তাকিয়ে ছিলাম বুকের দিকে, দিপালি দি কানে কানে বলল, অরণ্য খুব ভালবাসিস না

 আমাকে, কি হয়েছিল সেদিন তোর, সর্বনাসের মাথা খেয়েছিল উপন্যাসের মত, নাহলে গলির মোড়ে ঐভাবে চুমু খেলি,

 আমি কী তোর গোপন প্রেমিকা আর তুই কি আমার প্রথম অরণ্যপুরুষ । মাথাটা এখন বেশ হালকা লাগছে, স্পষ্ট হচ্ছে দৃষ্টি,

 চেনামুখের ভিতর দিপালিদিকে খুঁজছি, আবার সেই সংলাপগুলো, কে হই আমি তোর! প্রেমিকা! আর সেই ফুলের গন্ধটা ,,,।

Attachments area
Previous
Next Post »

এই ব্লগটি সন্ধান করুন